অনলাইন ডেস্ক •
আওয়ামী লীগের বা বঙ্গবন্ধু পরিবারের নাম ব্যবহার করে গজিয়ে উঠা ৮৩টি সংগঠন চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ৮৩টি সংগঠনের নেতৃত্বে যারা আছে তাদেরকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে এসব ভুঁইফোড় সংগঠনের উদ্যোক্তা, তাদের পৃষ্ঠপোষক এবং নেতৃত্বের নামের তালিকা রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা হতে যাচ্ছে।
গত শনিবার প্রজন্ম লীগ নামের একটি ভুঁইফোড় সংগঠন বঙ্গবন্ধু-২৩ এভিনিউতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সে সময় আওয়ামী লীগ সম্পাদকমন্ডলীর সভা চলছিল। আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর একাধিক নেতা এই বিষয়ে আপত্তি উত্থাপন করেন।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া তাৎক্ষনিকভাবে সেখানে যান এবং তাদেরকে সভা বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেন। এর পরপরই অন্যান্য নেতৃবৃন্দ যান এবং নির্দেশ দেন। তারা কার অনুমতি নিয়ে এখানে সভা করেছেন জানতে চান। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সভাস্থলে আসার পর তিনি এই ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এক পর্যায়ে প্রজন্ম লীগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুযায়ী এসব সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
জানা গেছে যে, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে যে কয়েকটি অঙ্গ সহযোগী সংগঠন রয়েছে এর বাইরে দুই তিনটি সংগঠন রয়েছে যারা আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে নিবন্ধিত নয় কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তারা সংগঠন করছে। এ সমস্ত সংগঠনগুলো দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের পাশে থেকেছে এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এ সংগঠনগুলো সম্পর্কে জানে এবং তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোন চাঁদাবাজি কিংবা অন্য কোন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ নেই।
এর বাইরে ৮১টি সংগঠন পাওয়া গেছে যে সংগঠনগুলো আওয়ামী লীগের কোন অঙ্গ সহযোগী সংগঠন কর্তৃক নিবন্ধিত নয়, আবার এ সংগঠন গুলোর বেশিরভাগই সাম্প্রতিক সময়ে গজিয়ে উঠেছে। এ সংগঠন গুলো নামে হয় লীগ ব্যবহার করেছে কিংবা বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য যেমন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা, শেখ রাসেল, শেখ কামাল, শেখ জামাল প্রমুখের নাম ব্যবহার করে গজিয়ে উঠেছে।
প্রথমত, এ সংগঠন গুলোর প্রধান কাজ হলো বিভিন্ন মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে এসে সংগঠনকে বৈধতা দেয়া।
দ্বিতীয়ত, সংগঠনের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদাবাজি করা।
তৃতীয়ত, সংগঠনের পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন যায়গায়, সচিবালয়ে তদবির করা।
চতুর্থত, এই সংগঠনের নাম এবং পরিচয় ব্যবহার করে টেন্ডারবাজি করা।
পঞ্চমত, এই সংগঠনের নাম ব্যবহার করে দুর্নীতি এবং অনিয়মের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত করা।
এ কারণেই এই সংগঠনগুলোতে যারা নেতৃত্বে আছেন তাদের খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। এসব সংগঠনের অত্যন্ত ৪০ জনকে পাওয়া গিয়েছে যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ জালিয়াতির মামলা রয়েছে। এই সমস্ত ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা জানায়, এরাই আওয়ামী লীগের নাম ভেঙে বিভিন্ন অপকর্ম করে , দোষ চাপে আওয়ামী লীগের উপর। এ ধরনের অপকর্ম যেন ভবিষ্যতে না হয় সেজন্য এসব সংগঠনের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের অনুমতি না নিয়ে লীগ বা বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারও নাম ব্যবহার করে যেসব সংগঠন হয়েছে সেগুলোকে শীঘ্রই বন্ধ করার জন্য যথাযথ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-