৩-১ গোলে হারিয়ে মিশন শুরু আর্জেন্টিনার

স্পোর্টস ডেস্ক •

বিশ্বকাপ বাছাইয়ের এবারের মিশনটা সহজ জয়েই শুরু করলো আর্জেন্টিনা। ভেনেজুয়েলার মাঠ থেকে ৩-১ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। যার সুবাদে বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়ার দৌড়েও বেশ খানিকটা এগিয়ে গেলো দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

ভেনেজুয়েলার ইউসিভি অলিম্পিক মাঠে ক্লিন শিট নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারতো আর্জেন্টিনা। কিন্তু ম্যাচের একদম শেষ সময়ে গিয়ে পেনাল্টিতে গোল হজম করে তারা। তবে এর আগেই লাউতারো মার্টিনেজ, হোয়াকিন কোররেরা ও অ্যাঞ্জেল কোররেয়ার গোলে নিজেদের কাজ সেরে রেখেছিল আলবিসেলেস্তেরা।

ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে লাউতারোর কাছ থেকে পাওয়া পাসে দারুণ সুযোগ আসে মেসির সামনে। কিন্তু অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায় আর্জেন্টাইন অধিনায়কের শট। খানিক বাদে জোরালো শট নেন রদ্রিগো ডি পল। তবে তা ঠেকিয়ে দেন ভেনেজুয়েলার গোলরক্ষক।

২৮ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত শট নিয়েছিলেন জিওভানি লো সেলসো। এবারও তা প্রতিহত হয় ভেনেজুয়েলার গোলরক্ষক ও রক্ষণের সামনে। পরের মিনিটেই মেসির পায়ে বিপজ্জনক ফাউল করেন মার্টিনেজ। রেফারি প্রথমে শুধু ফাউলের বাঁশি বাজান। তবে ডাকেন ভিডিও এসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সাহায্য।

ভিএআরের রিপ্লেতে দেখা যায়, ডি-বক্সের ঠিক বাইরে করা মার্টিনেজের ফাউলটি ছিল বেশ ভয়াবহ। তাই সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয় মার্টিনেজকে, দশজনের দলে পরিণত হয় স্বাগতিকরা। আর্জেন্টিনার স্বস্তির খবর হলো, কড়া ট্যাকেলের পরেও উঠে দাঁড়াতে সময় লাগেনি মেসি।

দশজনের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে গোল দিতেও বেশি সময় নেয়নি আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে গোল করেন লাউতারো। লো সেলসোর এগিয়ে দেয়া বল ডি-বক্সে একাই পেয়ে যান তিনি। বাকি কাজ সহজেই সারেন এ সুযোগসন্ধানী ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৬২ মিনিটের সময় লো সেলসোর জায়গায় হোয়াকিন কোররেয়া এবং পরের মিনিটে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার বদলে অ্যাঞ্জেল কোররেয়াকে নামান আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। কোচের এ সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা প্রমাণে মাত্র দশ মিনিট সময় নেন দুই কোররেয়া, স্কোর শিটে নাম তোলেন দুজনই।

ম্যাচের ৭১ মিনিটের সময় লাউতারোর কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন হোয়াকিন কোররেয়া। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে স্কোরলাইন ২-০ করেন তিনি। এর মিনিট তিনেক পর লাউতারোর শট ঠেকিয়ে দেন ভেনেজুয়েলা গোলরক্ষক। তবে ফিরতি বলে স্কোরশিটে নাম তুলতে ভুল করেননি অ্যাঞ্জেল কোররেয়া।

ম্যাচের একদম শেষ সময়ে গিয়ে গোল হজম করে আর্জেন্টিনা। বদলি হিসেবে নামা আলেজান্দ্রো গোমেজ ফাউল করেছিলেন সোতেলদোকে। রেফারি প্রথমে সেটিকে গুরুত্ব দেননি, সংকেত দেন খেলা চালিয়ে নেয়ার। কিন্তু ভিডিও এসিস্ট্যান্ট রেফারি তাকে এটি রিপ্লে দেখার পরামর্শ দেন।

প্রায় ৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে রিপ্লে দেখেন রেফারি। যেনো ঠিক সিদ্ধান্তেই পৌঁছতে পারছিলেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত বাজান পেনাল্টির বাঁশি। স্পটকিক থেকে সহজেই স্কোর শিটে নাম লেখান সোতেলদো। ভেনেজুয়েলা পায় এক গোলের সান্ত্বনা, আর্জেন্টিনা মাঠ ছাড়ে ৩-১ গোলের জয় নিয়ে।

এ জয়ের পর লাতিন অঞ্চলের বাছাইয়ে দ্বিতীয় স্থান আরও শক্ত হলো আর্জেন্টিনার। সাত ম্যাচে ৪ জয় ও ৩ ড্রয়ে তাদের সংগ্রহ ১৫ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে মাত্র ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে সবার নিচে রয়েছে ভেনেজুয়েলা।

আর্জেন্টিনার শুরুর একাদশ: এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, নাহুয়েল মোলিনা, জার্মান পেজ্জেল্লা, নিকোলাস ওটামেন্ডি, মার্কোস আকুনা, জিওভানি লো সেলসো, রদ্রিগো ডি পল, গুইদো রদ্রিগেজ, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, লিওনেল মেসি ও লাউতারো মার্টিনেজ।

ভেনেজুয়েলার শুরুর একাদশ: ফারিনেজ, গনজালেজ, ফেররারেসি, ভেলাকুয়েজ, গনজালেজ, সাভারিনো, রিনকন, মার্টিনেজ, সোতেলদো, জোসেফ ও রামিরেজ।

আরও খবর