কক্সবাজারে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চোরচক্র : এক সপ্তাহে আটক ৬

বিশেষ প্রতিবেদক •

পর্যটন নগরী ও রোহিঙ্গা অধ্যুষিত কক্সবাজার জেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মোটরসাইকেল চোরচক্র।

করোনার লকডাউন শিথিল হওয়ার পর থেকে আগস্ট মাসে জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ১০টি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় আতংক বিরাজ করছে জনমনে।

প্রশাসনের তৎপরতায় মাঝে মাঝে চক্রের কিছু সদস্য ধরা পড়লেও অজানা কারণে উপড়ে ফেলা যায়নি তাদের শিকড়।

গতে এক সপ্তাহে উখিয়া উপজেলায় তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে যায় চোর চক্র। অবশ্য এর মধ্যে ৪টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ। এরমধ্যে একজন রোহিঙ্গাও রয়েছে।

জানা য়ায়,৩১ আগস্ট মঙ্গলবার কক্সবাজারের দুই মোটরসাইকেল চোর চক্রের সদস্যকে আটক করেছে লোহাগাড়া থানা পুলিশ। আটকের পর মামলা দিয়ে দুপুরে তাদের দুজনকে আদলতে সোপর্দ করা হয়।

তারা হলেন, কক্সবাজার রামু উপজেলার মৌলভী পাড়ার ছালামুল্লাহর পুত্র মোরশেদ (২২) একই উপজেলার চাকমারপুল ছালে আহম্মদ পাড়ার শফিউল আলমের পুত্র মুজিবুর রহমান (২১)।

এর আগে গতকাল রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই সামশুদ্দৌহার নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম রামু এলাকা হতে মোটরসাইকেলসহ মোরশেদকে আটক করে।

আটকের পর স্বীকারোক্তি মতে ঈদগাহ এলাকা থেকে মুজিবুর রহমান নামে জড়িত আরো একজনকে আটক করা হয়।

লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ জাকের হোসাইন মাহমুদ জানান, মোটরসাইকেল চোরদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র রয়েছে। আটকৃত দুজনের বিরুদ্ধে থানায় চুরির মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের আদলতে সোপর্দ করা হয়েছে।

May be an image of 4 people, motorcycle, outdoors and text

এদিকে গত ২৯ আগস্ট উখিয়া রাজাপালং ইউপিস্থ ৫নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওয়ালাপালং সাকিনস্থ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থানা পুলিশের অভিযানে চোরাইকৃত মোটরসাইকেল উদ্ধারসহ এক রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত রোহিঙ্গা উখিয়ার কুতুপালং রেজিঃ ক্যাম্প ব্লক-বি এর মৃত মীর আহমদের পুত্র মোঃ আলম (২৫)।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

অপরদিকে গত ২৪ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৫টায় উখিয়া সদরের ৫নং ইউপির অর্ন্তগত ৫নং ওয়ার্ডস্থ সাবুল্লাঘাটা নামক স্থানে জসমি উদ্দিনের টমটম গ্যারেজের সামনে হতে অভিযান চালিয়ে আরও এক মোটরসাইকেল চোর চক্রের সদস্যকে আটক করে।সে কক্সবাজার পৌরসভা ৪নং ওয়ার্ড এর টেকপাড়ার মঞ্জুর আলমের পুত্র মোঃ সাদমান শিহাব (২৫)।

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সদর-মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ।

May be an image of 3 people, motorcycle and text that says ‘শৃংখলা নিরাপত্তা কক্সবাজার সদর মডেল থানা কক্সবাজার প্রগতি’

এদিকে ৩১ আগস্ট বিকালে কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বিক্রি করার সময় ঢাকা সাভার হইতে চোরাই যাওয়া সুজুকি ইন্ট্রুডার ব্যান্ডের মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে। এসময় দুই মোটরসাইকেল চোর চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফ্তার করেছে।

তারা হলো হাজীপাড়ার মৃত হাজী বশরত আলীর পুত্র নুরুল হক এবং খোদাইবাড়ির মৃত মোঃ হোসেনের পুত্র শাহাবুদ্দিন।

ঈদগাঁও থানা পুলিশ ইনচার্জ জানান, গত ৫ জুলাই মোটরসাইকেলটি চুরি হয়। পরে দীর্ঘ অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের শনাক্ত করে মোটরসাইকেলটি জব্দ করিতে সক্ষম হয়। অভিযানে দুই আসামি ইসলামপুরের জাহিদুল ইসলাম প্রকাশ বরমাইয়া জাহেদ এবং মিজান পালিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান,পলাতক আসামিদের আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আসামিরা মোটরসাইকেল চোরাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। বিভিন্ন এলাকা হইতে মোটরসাইকেল চুরি করে নিজ হেফাজতে রেখে ক্রয়- বিক্রয় করে।

গ্রেফ্তারকৃত আসামি ও পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে ঈদগাঁও থানায় নিয়মিত মামলা নং ০৬(৮)২১ রুজু হয়েছে। ধৃত আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ভূক্তভোগীরা জানান, জেলায় চোরদের রয়েছে শক্ত সিন্ডিকেট।এই চোর চক্রের হাতে কারো মোটরসাইকেল নিরাপদ নয়। এসব চোর ধরতে প্রশাসনের আরো কঠোর নজরদারি প্রয়োজন ।তাদের দাবি দ্রুত এই সিন্ডিকেট চক্র চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা।

আরও খবর