উখিয়ার সীমান্ত এলাকা করইবনিয়া এখন ইয়াবার পাইকারি বাজার

বিশেষ প্রতিবেদক •

উখিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত জনপদ করইবনিয়া এখন ইয়াবার পাইকারি বাজারে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনের মূল টার্গেট ইয়াবার বাজার নিয়ন্ত্রণকারীদের হাতেনাতে ধরা। তাই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইয়াবা পাচার প্রতিরোধে তৎপর।

কিন্তু স্থানীয় দালালদের কারণে সব পরিকল্পনা ভেস্তে যাচ্ছে। যে কারণে সীমান্তের ইয়াবা গডফাদারদের ধরতে প্রশাসন বাধ্য হয়ে পুরস্কার ঘোষণা করেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীসহ সারা দেশে মাদকের গডফাদার রয়েছে প্রায় ৯ শতাধিক।

পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ও সীমান্ত এলাকা হওয়ায় পালংখালী মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। এখানে ইয়াবা কারবারির সংখ্যা ৫০ জনের মতো। যদিও সেবনকারীর সংখ্যা আরও বেশি। এদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসী সোচ্চার না হওয়ার কারণে ইয়াবা পাচার, সেবন ও বহন কোনোটাই বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

পার্সেলে মধ্যপ্রাচ্যে ইয়াবা পাচার!

সরেজমিন রাজাপালং ইউনিয়নের গহিন অরণ্য ঘেরা সীমান্ত জনপদ ঘুরে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে ইয়াবার তথ্য জানতে চাইলে একে একে সবাই পাশ কাটিয়ে চলে যান। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েক জন শিক্ষিত যুবক জানালেন, তিন জন ইয়াবা গডফাদারের নেতৃত্বে প্রায় ২৫ জনের একটি গ্রুপ ইয়াবা পাচারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ঐ ছাত্ররা বললেন, এখানে কালো চেয়ারম্যান নামের মিয়ানমারের এক জন ইয়াবা কারবারি স্থানীয়ভাবে বসবাস শুরু করেছে দীর্ঘদিন ধরে। ঐ কালোসহ আরও দুই জন সন্ত্রাসী ইয়াবার চালান নিয়ন্ত্রণ করছে। কালোর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ। তার ছেলে জানায়, বাবা গভীর রাতে বাড়ি আসে।

খালকাটা পাড়া গ্রামের মৃত সুলতান আহমদের মেয়ে জরিনা খাতুন (৬০) একটি যুবতি মেয়ে নিয়ে বাড়িতে একাকী থাকেন। তিনি জানান, ইয়াবা কারবারি আব্দুইয়া তার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি নাকচ করে দেন। পরদিন রাতে তারা বাড়িতে ঢুকে শারীরিক নির্যাতন করে। তিনি আরও জানান, এখানে দিনের বেলায় কেউ থাকে না। রাত নামলে যেন করইবনিয়া ইয়াবার জমজমাট বাজার। সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের ভয়ে কেউ মুখ খুলতেও পারছে না।

গত ৫ আগস্ট করইবনিয়া এলাকায় রেজু আমতলী বিজিবি অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ৪ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। এ সময় পাচারকারী চক্রের অস্ত্রধারী সদস্যরা বিজিবির ওপর হামলা চালালে আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে।

কক্সবাজার কলেজে কর্মরত করইবনিয়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা প্রফেসর মোজাফ্ফর আহমদ বলেন, ইয়াবা সেবন, পাচার প্রতিরোধে উদ্যোগ নেওয়া হলে এলাকার ইয়াবা ডন খ্যাত জনৈক সন্ত্রাসী তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। এ ব্যাপারে উখিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আরও খবর