মহেশখালীতে বেড়িবাঁধ ঘেষে বালি উত্তোলন: তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা শতাধিক বাড়িঘর!

গাজী মোহাম্মদ আবু তাহের, মহেশখালী •

দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মাতারবাড়ী ও ধলঘাটার জনসাধারণ বেড়িবাঁধ ঘেষে বালি উত্তোলনে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে শতাধিক পরিবার।

অপরদিকে তাদের নিরাপত্তা দেয়ার নামে চলছে হরিলুট ও দুর্নীতির মহাযজ্ঞ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়-চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুর দিকে মাতারবাড়ির বেড়িবাঁধের পশ্চিম দিকে নষ্ট জিও ব্যাগ বসিয়ে মেরামত কাজ শুরু করা হয়।

তাছাড়া ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডবে ভাঙ্গা বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশেও জিও ব্যাগ বসানো হয়।

কিন্তু সপ্তাহ ধরে ভারী বর্ষণে সাগরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে জিও ব্যাগ গুলো নষ্ট হয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে, ফলে প্রায় শতাধিক বাড়িঘর নষ্ট হয়ে যাওয়া সম্ভবনা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হলে প্রতিবছর জিওব্যাগ স্থাপন করেও তাদের বাড়িঘর রক্ষা করা যাবে না।

১লা আগস্ট রবিবার বিকেলে সরেজমিনে পরিশদর্শনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধ ও জিও ব্যাগ বসানোর স্থান থেকে মাত্র ৭-৮ মিটার দুরত্বের জায়গা থেকে বালি উত্তোলণ করে বিশাল আকৃতির গর্ত করা হয়েছে। বেড়িবাঁধের এতো কাছ হতে বালি উত্তোলণে যে কোন মুহুর্তে জিও ব্যাগ গুলো সরে যেতে পারে। এতে করে লোকালয় আবারো প্লাবিত হবে।

এরকম দায়িত্বকান্ডহীন কাজের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম সহ নানান মহলে চলছে সমালোচনার ঝড়।

স্থানীয় তৌহিদুল ইসলাম নামে এক যুবক বলেন, “জিও ব্যাগের পাশ থেকে বালি উত্তোলন বন্ধের অনুরোধ করা হলে কর্মরতরা জানিয়েছেন গর্তগুলো জোয়ারের পানিতে ভরাট হয়ে যাবে। এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক কথাবার্তা।

ফাতেমা বেগম, মোহাম্মদ আলী সহ স্থানীয় অনেকেই জানান, বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশে কাজ না করে পূর্বে বসানো জিও ব্যাগের পাশেই কাজ করছে তারা। ইতিমধ্যে তাদের ঘরবাড়ী পানিতে তলিয়ে গেছে। তাই ভাঙ্গা অংশে জিও ব্যাগ বা বেড়িবাঁধ দেয়া প্রয়োজন।

এবিষয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহফুজুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি জানার পরপরই কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক কলিম উদ্দিন কলিম জানান, বেড়িবাঁধের পাশ থেকে বালি বা মাটি উত্তোলনের কোন নিয়ম নেই। অথচ নিয়ম না মেনেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বালি উত্তোলন করে বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে ফেলছেন।

এই কাজে নিয়োজিত জহির এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার নজরুল ইসলাম বলেন, “নিয়োজিত শ্রমিকরা অনিয়ম করছে কি না জানা নেই। অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি ৷

এদিকে বিষয়টি সম্পর্কে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ না পাওয়া কারণে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

আরও খবর