কক্সবাজারে করোনার তান্ডব বাড়ছে : ২৪ ঘন্টায় আরও ৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২৩৪

বিশেষ প্রতিবেদক •

কক্সবাজার জেলায় মাত্র চব্বিশ ঘন্টার ব্যবধানে আবারও বেড়েছে  করোনা রোগী। ২৪ ঘন্টায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৩৪ জন।

এর আগের দিন শনিবার এ সংখ্যা ছিল ১৮৫ জন। শনাক্তের দিক দিয়ে জেলায় আবারও ডাবল সেঞ্চুরী ছুঁল করোনা। একই সময়ে মারা গেছেন আরও ৪ জন।

এ নিয়ে টানা পাঁচ দিনে ১৮ করোনা রোগীর মৃত্যূ দেখল জেলাবাসী। এর আগে গত বুধবার ৪ জন, বৃহস্পতিবার ৪ জন,শুক্রবার ৩ জনের পর শনিবার আরও ৩ জনের মৃত্যূ হয়।

এনিয়ে তিন দিনে ১৪ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হল। আর পুরো জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৮ রোহিঙ্গাসহ ১৯৪ জন। এদের মধ্যে ৮৯ জনই কক্সবাজার সদর ও পৌরসভার বাসিন্দা। সুস্থ হয়েছেন ১৪১ জন। জেলায় আক্রান্তের হার ২২.২%।

আজ রোববার ১লা আগস্ট দুপুর দেড়টায় কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তারা জানায়, শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত সময়ে ৭০৯টি টেস্টে কক্সবাজারের আট উপজেলায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২৩৪ জন।

এর মধ্যে কক্সবাজার সদর ও পৌরসভাতেই শনাক্ত হয়েছেন ৮৬ জন । উখিয়া উপজেলায় ৪২ জন,টেকনাফ উপজেলায় ৩০ জন,রামু উপজেলায় ২৭ জন,পেকুয়া উপজেলায় ৩ জন,মহেশখালি উপজেলায় ২৩ জন, চকরিয়া উপজেলায় ১৪ জন,কুতুবদিয়া উপজেলায় ৬ জন।

শনিবার এ সংখ্যা ছিল ১৮৫ জন,শুক্রবার ছিল ২০১ জন, বৃহস্পতিবার ছিল ২০২ জন,বুধবার ছিল ৩২৪ জন এবং মঙ্গলবার ছিল রেকর্ড ৩২৬ জন।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস আরও জানায়,২৪ ঘন্টায় জেলায় করোনা আরও ৪ জনের মৃত্যূ হয়েছে। এদের মধ্যে রামু উপজেলার ২ জন ,একজন উখিয়ার (রোহিঙ্গা), অন্যজন কক্সবাজার সদরের।

তারা হলেন-কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালীর সিরাজুল হক(৬২)।কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ১৫ জুলাই মৃত্যু ৩১ জুলাই।

রামু উপজেলার ঈদগড়ের আবুল কালাম(৫৮)। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ২৩ জুলাই মৃত্যু ৩১ জুলাই।

রামু উপজেলার সাজেদা বেগম(৪৫)। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ২৫ জুলাই মৃত্যু ৩১ জুলাই। এবং

উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৮ ব্লক-২৩ এর জহুরা বেগম(৩২)। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ২৫ জুলাই মৃত্যু ৩১ জুলাই।

সিভিল সার্জন অফিস আরও জানায়, জেলায় ২৪ ঘন্টায় ২৫৬টি র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে ৭৬জন পজিটিভ হয়েছেন। এর মধ্যে সদরে ২৩ জন,উখিয়ায় ১৫ জন, রামুতে ১৫ জন,চকরিয়া য় ৭ জন,,কুতুবদিয়ায় ৬ জন,মহেশখালিতে ৫জন। এ পর্যন্ত জেলায় ৬ হাজার ৬৮২টি র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে করোনা পজিটিভ হয়েছেন ১ হাজার ৮১৭ জন। এর মধ্যে স্থানীয় ১ হাজার ৭৩৭ জন এবং রোহিঙ্গা ৮০ জন।

১লা আগস্ট পর্যন্ত জেলায় করোনার পরীক্ষা করা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৮৮৩ জনের।এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ১৮ হাজার ৭০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ৪৯১ জন। প্রতিষ্ঠানিক আইশোলেসনে রয়েছেন ৪৯৪ জন। মৃত্যূবরণ করেছেন ২৮ রোহিঙ্গাসহ ১৯৪ জন। তার মধ্যে সদর ও পৌরসভার ৮৯ জন,উখিয়ায় ৪২ জন,টেকনাফে ১৯ জন,চকরিয়ায় ২০ জন,রামুতে ১২ জন,পেকুয়ায় ৫ জন,মহেশখালিতে ৪ জন এবং কুতুবদিয়ায় ৩ জন ।

২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের শরনার্থী শিবিরের ১০২টি টেস্টে পজিটিভ হয়েছে ৬ জন। শরনার্থী শিবিরে এ পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৩৭২ রোহিঙ্গার নমুনা পরীক্ষায় করোনাক্রান্ত‘র সংখ্যা ২ হাজার ৫০২ জন।এর মধ্যে উখিয়া শরনার্থী শিবিরে ২ হাজার ৮৭ জন এবং টেকনাফ শরনার্থী শিবিরে ৪৫৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২০৫ জন। আইসোলেশনে রয়েছেন ২১৯ জন।মৃত্যূবরণ করেছেন ২৮ জন। আক্রান্তের হার ৪.৬৯%।

এদিকে জেলা প্রশাসন কক্সবাজার শহরসহ বি‌ভিন্ন উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিশেষ তৎপরতা চলালেও সংক্রমন কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কোরবাণী ঈদের পর ২৪ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের পাশাপাশি করোনা রোগীরা যাতে সাধারণ মানুষের স্পর্শে আসতে না পারে ও মানুষ যা‌তে স্বাস্থ্য‌বি‌ধি মে‌নে চ‌লে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তা সত্তেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। তবে করোনার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে রোগীর সংখ্যা কমানো তথা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের উপর জোর দিয়ে আরো বেশি করে গণসচেতনতা তৈরির উপর গুরুত্ব এবং লকডাউন অর্থবহ করতে জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশসানকে আরো কঠোর ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়েছে সচেতন মহল।

আরও খবর