ডেস্ক রিপোর্ট •
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারি টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্যান্য নির্দেশনা মেনে চলার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে ইউনিয়ন পর্যায়ে এবং ইউনিয়ন পরিষদের একজন ওয়ার্ড সদস্যকে প্রধান করে ওয়ার্ড পর্যায়ে আলাদা আলাদা ১৪ সদস্য বিশিষ্ট দুটি কমিটি গঠন করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটিতে অন্যান্যের মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, একজন বিশিষ্ট সমাজ সেবক, স্থানীয় একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি, একজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, পরিবার কল্যাণ সহকারী, মাদ্রাসার একজন শিক্ষক, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত একজন এনজিও প্রতিনিধি, দফাদার, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়নের অন্তর্গত বৃহত্তম হাট/বাজারের ব্যবস্থাপনা কমিটির একজন প্রতিনিধি, ইউপি সচিব, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য থাকবে। এছাড়া, এ কমিটি কাজের সুবিধার্থে এক বা একাধিক সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।
অপরদিকে, ওয়ার্ডের সদস্যকে সভাপতি করে ওয়ার্ড পর্যায়ে ১৪ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
এতে, একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন প্রাথমিক শিক্ষক, সমাজসেবক, মসজিদের ইমাম, স্বাস্থ্যসহকারী, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, হাট-বাজারের ব্যবস্থাপনা কমিটির একজন প্রতিনিধি, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার, গ্রাম পুলিশ, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড, আনসার ভিডিপির একজন সদস্য থাকবে। এ কমিটি কাজের সুবিধার্থে এক বা একাধিক সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে। সদস্যসমূহ নির্বাচনের ক্ষেত্রে কমিটির সভাপতির মতামত প্রাধান্য পাবে।
কমিটির কর্মপরিধিতে বলা হয়েছে, এসব কমিটির সদস্যরা ভ্যাকসিন গ্রহণে সর্বস্তরের জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণ; বয়স্ক ব্যক্তিদের ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে নিয়ে আসতে সহায়তা করা; কোভিড-১৯ সন্দিগ্ধ ব্যক্তিদের শরীরের তাপমাত্রা ও অক্সিজেন লেভেল পরীক্ষা করে প্রযোজ্য র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টের জন্য প্রেরণ ও শনাক্তকৃত ব্যক্তিদের আইসোলেশন বা চিকিৎসার বাবস্থাকরণ; কোভিড-১৯ সংক্রমিত ব্যক্তিদের আইসোলেশন, কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ, সর্বস্তরের জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে ও মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ, হাট-বাজার, চায়ের দোকান বা জনসমাগম হয় এমন স্থানে ভিড় পরিহারের ব্যবস্থাগ্রহণ, সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন সহায়তা করা, স্বাস্থ্যবিধি পালন, মাস্ক ব্যবহার, ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম ইত্যাদি বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে চাইছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে করোনা নিয়ন্ত্রণে করণীয় নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু লকডাউন দিয়ে আমরা এই সংক্রমণ রোধ করতে পারব না। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মাস্ক পরতে হবে। পাশাপাশি টিকা দেওয়ার বিষয়ে আমরা বেশি জোর দিচ্ছি, এ কারণে ইউনিয়ন পরিষদে টিকা কেন্দ্র স্থাপন করছি। যেখান থেকে ইউনিয়নের সমস্ত লোকজন এসে টিকা নিতে পারবে। যারা এনআইডি কার্ড নিয়ে আসবে তারাই টিকা দিতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করছি। আমরা চাচ্ছি যারা পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলা এবং পুরুষ আছে তারা যেন টিকা কেন্দ্রে এসেই টিকা দিতে পারে। টিকা যখন আমাদের কাছে আরও বেশি আসবে তখন আমরা ওয়ার্ড পর্যায়ে যেতে পারব।
এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান উপস্থিত থেকে বলেন, আমরা শুধু নিরাপত্তা বাহিনী ও আমাদের সরকারি কর্মকর্তাদেরই টিকার আওতায় নিয়ে আসব না। আমাদের জনপ্রতিনিধি, আমাদের ধর্মীয় নেতারা, আমাদের সমাজের নেতারা, ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, ওয়ার্ডের নেতারা সবাইকে এই টিকাদান কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হবে। নাহলে আমরা এই ভাইরাস থেকে পরিত্রাণ পাবো না এটাই এই সভায় আলোচনায় বেরিয়ে এসেছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-