রোহিঙ্গা ডাকায় মাইক্রোবাস চালককে পিটিয়ে হত্যা

হিলি প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের হিলিতে রোহিঙ্গা বলে সম্বোধন করায় ইলিয়াস হোসেন (৩৪) নামের এক মাইক্রোবাস চালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে তার হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে স্থানীয় কার ও মাইক্রোবাস চালক সমবায় সমিতি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে হিলি স্থলবন্দরের চারমাথা মোড় সংলগ্ন মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকজন যুবক তাকে মারধর করে গুরুতর আহত করে ফেলে যায়।

শনিবার (২৪ জুলাই) সকালে বিরামপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করেন। নিহত ইলিয়াস হোসেন হিলির পাইকপাড়া গ্রামের মৃত মহসিন আলীর ছেলে। সে হিলি স্থলবন্দর এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ মাইক্রোবাস চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

ইলিয়াসের সহকর্মীরা জানান, হিলির বৈগ্রাম এলাকার জনৈক আকতারুজ্জামান অবস্থাসম্পন্ন হওয়ার পরেও নিজে মাঠে ঘাটে কাজ করায় তাকে স্থানীয় লোকজন তাকে বিভিন্ন কথা বলে উত্যক্ত করতো। সেও এসব কথা শুনে খুব রেগে যেতো। অন্যদের মতো ইলিয়াসও তাকে উত্যক্ত করতো।

অন্যান্য দিনের মতো ঈদের পর দিন ইলিয়াস গ্রামের বাড়ি পাইকপাড়া থেকে হিলিতে আসার পথে বৈগ্রামের আক্তারুজ্জামানকে অন্যদের মতো সেও রোহিঙ্গা বলে পেছন থেকে সম্বোধন করে।

এতে আকতারুজ্জামান ক্ষিপ্ত হয়ে ইলিয়াসকে তাড়া করেন, কিন্তু তাকে ধরতে পারেনি। পরে তার আত্মীয় স্বজনকে এই ক্ষেপানোর বিষয়টি জানালে কয়েকজন যুবক মাইক্রোস্ট্যান্ডে গিয়ে ইলিয়াসকে মারধর করেন ও উপরে তুলে আছাড় মারেন।

এতে ইলিয়াস হোসেন গুরুত্বর আহত হলে তারা চলে যান। এ সময় তার সহকর্মীরা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যেতে বলেন।

কিন্তু, অর্থাভাবে তাকে বাইরে নিতে না পারায় পার্শ্ববর্তী বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে চিকিৎসা চলছিলো। সেখানেই আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে।

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, নিহত ইলিয়াস হোসেন কি একটি বিষয় নিয়ে একজনের সাথে দুষ্টমি করতো। সেই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকজন মিলে গত বৃহস্পতিবার মাইক্রোস্টান্ডে গিয়ে তাকে ধরে পা উপরের দিকে মাথা নিচের দিক করে ফেলে দেয়। এতে তার মাথার শেষের দিকে মেরুদন্ডের হাড় ভেঙ্গে যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে, পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আরও খবর