বিশেষ প্রতিবেদক •
ভারতের দিল্লির উত্তর প্রদেশে বসবাস করা দুই রোহিঙ্গা পরিবাবের ৭ সদস্য অনুপ্রবেশ করে কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন।
মঙ্গলবার (৬ জুলাই) বিকেলে উখিয়ার কুতুপালং মধুরছরা ক্যাম্প-৩ এর ব্লক-জি/১ শেডের এফসিএন-১৫৫১৪১ নম্বর ধারি রহিমা খাতুনের ঘর হতে তাদের আটক করা হয়। ক্যাম্প সিআইসি তাদেরকে কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্প এর অধীন ট্রানজিট সেন্টারে প্রেরণ করেছেন। কুতুপালং ক্যাম্পে কর্মরত কক্সবাজার ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক নাঈমুল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।
আটক অনুপ্রবেশকারি রোহিঙ্গারা হলো, মিয়ানমারের আবিয়াব জেলার বুচিডং থানার কিয়াংবু এলাকার মৃত মকবুল আহম্মেদের ছেলে মোহাম্মদ আমিন (৩৫), তার স্ত্রী খতিজা বেগম (২৭) এবং মেয়ে বিবি হাফছা (১২) ও একই এলাকার ছলিম মাহাম্মুদের ছেলে আব্দুর রহমান (২৭), তার স্ত্রী সামজিদা (২৫) এবং ছেলে মোহাম্মদ ওমর (৫), মেয়ে ইয়াছমিন ফাতেমা (৮)। তারা ভারতের দিল্লীর উত্তর প্রদেশের ছম্ভল, মুরাদাবাদ এলাকায় বাস করতো। সেখানে তারা ইউএনএইচসিআর’র তালিকাভূক্ত শরণার্থী। মধুরছরা (ক্যাম্প-৩) এর ব্লক-জি/১ শেডের রহিমা খাতুন (স্বামী-মৃত শামসু আলাম) মোহাম্মদ আমিন ও আব্দুর রহমানের শ্বাশুড়ি।
আটকদের বরাত দিয়ে ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক (এসপি) নাঈমুল হক বলেন, আব্দুর রহমান ও মোহাম্মদ আমিন ২০১০ সালে মিয়ানমার হতে ভারতে যান। এরও বছর পাঁচেক আগে থেকে খতিজা ও সামজিদার মা রহিমা পরিবারসহ মিয়ানমার হতে ভারতে গিয়ে বসবাস করতেন। সেখানে আব্দুর রহমান ও মোহাম্মদ আমিন এর সাথে খতিজা ও সামজিদা’র বিয়ে হয়। ২০১৭ সালে মিয়ানমার হতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসার পর রহিমা খাতুন তার মেয়ে রাবেয়া বেগম ও ৩ ছেলে ছানাউল্যা, রোকন উল্যা, মো. সেলিমকে নিয়ে ভারত হতে বাংলাদেশ এসে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৩ এর জি/১-ব্লকে আশ্রয় নেন। রহিমা খাতুন বাংলাদেশ থেকে ভারতে থাকা তার মেয়ে ও মেয়ের জামাইদের সাথে মোবাইল ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। রোহিঙ্গা আব্দুর রহমান ও মোহাম্মদ আমিন তাদের পরিবারসহ ভারতের দিল্লির ছম্ভল, মুরাদাবাদের বিকাশপুরী শরণার্থী ক্যাম্পের ইউএনএইচসিআর-এর নিবন্ধিত শরণার্থী হলেও সেখানে তারা কোনো রেশন সমগ্রী পেতো না। ফলে, রাজমিস্ত্রি’র কাজ করে সংসার চালাতো। সেখানে তাদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার কোন সুযোগও ছিল না। তাই, উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৩ এ বসবাসকারী তাদের শ্বাশুড়ি রহিমা বেগমের সাথে যোগাযোগ করে ২৮ জুন ভারত হতে রওয়ানা দেয় তারা।
তিনি আরও জানান, সিলেটের মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে ৩০ জুন রাত ৮টায় তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। একই দিন মৌলভীবাজার হতে ১৬ হাজার টাকা মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে রাত ১০টায় রওয়ানা দিয়ে ১ জুলাই সকাল ৭টায় চট্টগ্রামে এসে পৌঁছায়। চট্টগ্রাম হতে ৫ হাজার টাকায় পিকআপ ভাড়া করে ৫ জুলাই রাত ৮টার দিকে পৌঁছায় কুতুপালং বাজারে। সেখান থেকে খতিজা ও সানজিদার ভাই রোকন উল্যা তাদের ক্যাম্প-৩ এ তাদের মায়ের শেডে নিয়ে আসে।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার খবর আসে ভারত থেকে দুটি রোহিঙ্গা পরিবার ক্যাম্পে অবস্থান নিয়েছে। এ খবরে মধুছড়া ক্যাম্প পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত রহিমার বাড়ি হতে তাদের আটক করে ক্যাম্প সিআইসির কার্যালয়ে নিয়ে যায়।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-