এনজিও ফোরামে নারী সহকর্মীকে যৌন হয়রানী সংবাদে তোলপাড়, বহাল তবিয়তে হাসেম ভূঁইয়া

এম.এ আজিজ রাসেল •


টেকনাফে এনজিও ফোরামের প্রজেক্ট ম্যানেজার হাসেম ভূঁইয়ার হাতে প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানীর শিকার হচ্ছেন নারী সহকর্মীরা। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ওই কর্মকর্তা নারী সহকর্মীদের কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ নিয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ভুক্তভোগীর এমন অভিযোগ পেয়ে গত ২ জুন তথ্যভিত্তিক বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক আজকের কক্সবাজার। সংবাদ প্রকাশের পর এনজিও ফোরামসহ এনজিও পাড়া ও সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সেই সাথে জনমনে এনজিও ফোরাম নিয়ে নানান মিশ্র প্রতিক্রিয়া করতে দেখা যায়।

নিজের কুকীর্তি প্রকাশ্যে জানাজানি হওয়ায় অপকর্ম ঢাকতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে টেকনাফে এনজিও ফোরামের প্রজেক্ট ম্যানেজার হাসেম ভূঁইয়া।

মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করতে তারপক্ষে এনজিওতে মালামাল সাপ্লাই দেওয়া কয়েকজন ঠিকাদার উঠেপড়ে লাগে। নানা হুমকী ধমকীও দেয়া হয় প্রতিবেদক ও পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে। এতোকিছুর পরও টনক নড়েনি সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের। এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে অভিযুক্ত হাসেম ভূঁইয়া।

এদিকে হাসেম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়ায় চরম আতংকে রয়েছে এনজিও ফোরামে কর্মরত নারীরা। এছাড়া নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী ওই নারীসহ অন্যান্যরা। অতিদ্রæত বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে নারীলোভী হাসেম ভূঁইয়ার দৃষ্টান্ত শাস্তি দাবি করেন সুশীল মহল।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা অভিযোগ পেলে তড়িৎ ব্যবস্থা নিব।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, বিষয়টি উদ্বেগজনক। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে বলা হবে। তারা কোন ব্যবস্থা না নিলে ওই নারী অভিযোগ দিলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানা যায়, হাসেম ভূঁইয়া যোগদানের পর থেকে নানা বিকর্ত কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে। সবসময় নারী সহকর্মীদের অশ্লীল বাক্য ছুড়ে দিয়ে কথা বলেন।

ম্যাসেঞ্জার ও হোয়াটস অ্যাপে প্রেমসহ নানা কুপ্রস্তাব দেন প্রতিনিয়ত। অফিসের এক নারী সহকর্মীকে হোয়াটস অ্যাপে কু-প্রস্তাব দেয়ার কিছু স্কীল শট এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

স্কীন শটগুলোতে দেখা যায়, টেকনাফে এনজিও ফোরামের প্রজেক্ট ম্যানেজার হাসেম ভূঁইয়া ওই নারী সহকর্মীকে হোয়াটস অ্যাপে নানাভাবে প্রলোভন দেখায়। তাঁর সাথে একান্ত সময় কাটানোর জন্য ফুসলিয়ে নানা অশ্লীল কথাবার্তা বলে। ওই নারী সহকর্মী অশ্লীল বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও হাসেম ভূঁইয়া বার বার নানা কু-প্রস্তাব দিতে থাকে। শেষ পর্যায়ে তাঁর যৌন হয়রানীতে অতিষ্ট হয়ে গণমাধ্যমের শরনাপন্ন হন ওই নারী।

তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, হাসেম ভূঁইয়া তাঁর জীবন অতিষ্ট করে তুলেছে। বার বার তাকে তাঁর সাথে একান্তভাবে সময় কাটানোর জন্য প্রলুব্ধ করছে।

কক্সবাজারে বিভিন্ন হোটেলের রুমে যাওয়ার মতো জঘন্য প্রস্তাব দিচ্ছে। এই অবস্থায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে। বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান না হলে নারীরা এনজিও ফোরামে চাকুরী করা নিরাপদ নয়। তাই তিনি নারী লোভী হাসেম ভূঁইয়ার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক সাংবাদিক এইচ,এম নজরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন এনজিও ও আইএনজিওতে এমন নারী লোভী ঘাপটি মেরে রয়েছে। তাদের জন্য নারীরা কর্মজীবনে নিরাপদ নয়। এনজিও সংস্থা লাইট হাইজেও এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। তাই তাদের চিহ্নিত করে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তিনি জেলা প্রশাসন ও আরআরআরসি সুনজর কামনা করেন।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে টেকনাফে এনজিও ফোরামের প্রজেক্ট ম্যানেজার হাসেম ভূঁইয়া বলেন, অনেকে অফিসে নানা সুযোগ সুবিধা চায়। তা দিতে না পারায় তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আরও খবর