বিয়ের পিঁড়িতে বসা হলো না এসআই শাওলিনের

অনলাইন ডেস্ক •

নতুন বউয়ের সাজে কনে বরগুনা থেকে লঞ্চে এসেছিলেন সদরঘাটে। যাকে নিয়ে জীবন সংসার নতুনভাবে সাজাবেন সেই হবু স্ত্রীকে আনতে রোববার সকালে সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) উপ-পরিদর্শক শাওলিন আকিব।

লঞ্চটি পল্টুনে ভেড়ার পর সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে পা পিছলে মাথায় আঘাত পান তিনি। বৃষ্টির পানিতে সিঁড়ি ভেজা ছিল। এরপর অচেতন হয়ে পড়ে যান বুড়িগঙ্গায়। আর বাঁচানো যায়নি তাকে।

এমন দুর্ঘটনায় একটি সুন্দর সময় রূপ নিল বিষাদের কালো ছায়ায়। হবু বউয়ের হাত ধরা হলো না তার। যার সঙ্গে বিয়ের সব আয়োজন চূড়ন্ত ছিল। ২৮ বছর বয়সী শাওলিন এসবির রাজনৈতিক বিভাগের উপ-পরিদর্শক ছিলেন। মালিবাগে এসবির প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন তিনি।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, শাওলিন সপরিবার রাজধানীর মাতুয়াইলে কাজীরগাঁওয়ে থাকতেন। কিছু দিন আগে তার বিয়ের সব কিছু চূড়ান্ত হয়। শনিবার সন্ধ্যায় বরগুনা থেকে ছেড়ে আসা রাজারহাট বি লঞ্চে ওঠেন তার হবু স্ত্রী ও স্বজনেরা। রোববার সকাল ৭টার দিকে লঞ্চটি সদরঘাট টার্মিনালে ভেড়ে। এ সময় শাওলিন তার হবু স্ত্রীকে আনতে লঞ্চটিতে উঠছিলেন। একপর্যায়ে তিনি পা পিছলে টার্মিনালের পন্টুনের ওপর পড়ে গেলে তার মাথায় আঘাত লাগে এবং অচেতন হয়ে বুড়িগঙ্গায় পড়ে যান।

নৌ পুলিশের ঢাকা অঞ্চলের পরিদর্শক গোলাম মোরশেদ তালুকদার বলেন, বুড়িগঙ্গা থেকে শাওলিনকে উদ্ধার করে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখানে উপস্থিত হবু স্ত্রী, তার স্বজন এবং শাওলিনের স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে শাওলিনের স্বজনেরা নৌ পুলিশের অনুমতি নিয়ে লাশ মাতুয়াইলে দাফনের জন্য নিয়ে যান।

শাওলিনের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানার মাথা ভাঙা গ্রামে। তার বাবা রফিকুল ইসলাম অবসরপ্রাপ্ত পুলিশের উপপরিদর্শক। বড় ভাই শিবলী আকিবও মালিবাগে এসবিতে পুলিশ পরিদর্শক পদে কর্মরত। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে শাওলিন ছোট। ২০১৯ সালে এসআই হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। পুলিশের প্রশিক্ষণ শেষে মাস তিনেক আগে এসবিতে যোগ দেন।

আরও খবর