বিশেষ প্রতিবেদক •
কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদী পার হয়ে গত কয়েকদিনে অন্তত ১০ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের কুতুপালংয়ের ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।
শুক্রবার অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সামসুদ্দৌজা নয়ন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে টেকনাফের নয়াপাড়া সীমান্ত দিয়ে ছয় জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন।
তারা হলেন, মংডুর মংনামা এলাকার মো. আরিফ (২৪), গওজবিল এলাকার মো. ইউনুস (২৮), বশির আহমদ (৫৬), সোনা আলী (৫৬), সৈয়দ আলম ও শওকত আলী (৩৭)। তারা টেকনাফের নয়াপাড়া ও উনচিপ্রাং ক্যাম্পে অবস্থান নেন।
এর আগে, ২৬ এপ্রিল টেকনাফের হ্নীলার জাদিমুরা সীমান্ত দিয়ে প্রথমে দুই জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেন। তারা হলেন, মিয়ানমারের মংডুর বাসিন্দা আমান উল্লাহ (২৩) ও মো. ইসহাক (২০)। ২৮ এপ্রিল হ্নীলার নয়াপাড়া সীমান্ত দিয়ে নাফ নদী পার হয়ে আরও দুই রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেন। এই দুই রোহিঙ্গা হলেন, মংডু জেলার গওজবিল এলাকার কবির আহমদ (৬০) ও মোহাম্মদ ফেডান (২২)।
এই চার জনই বাংলাদেশে এসে হ্নীলার শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। পরে ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) কাছে এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
এ বিষয়ে এপিবিএন-১৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে পুলিশ কথা বলেছে। তারা পুলিশ ও ক্যাম্প প্রশাসনকে জানান যে, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা শুরু হলে তারা মিয়ানমার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। গত তিন বছরের বেশি সময় তারা সেখানকার কারাগারে বন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তারা কারামুক্ত হওয়ার পর নাফ নদী হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে রোহিঙ্গা শিবিরে আসেন।’
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল জানান, গত কয়েকদিনে মিয়ানমার থেকে এসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বর্তমানে কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা তাদের ওপর কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সামসুদ্দৌজা বলেন, ‘নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দেবে আরআরআরসি অফিস তা কার্যকর করবে।’
গত ২১ এপ্রিল সকালে টেকনাফের নয়াপাড়া সীমান্ত দিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুই জন এবং পরদিন হোয়াইক্ষ্যং উনচিপ্রাং সীমান্ত দিয়ে নৌকাযোগে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে ২০ জন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। পরে তাদের মানবিক সহযোগিতা দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-