আনছার হোসেন •
কঠোর লকডাউনেও কক্সবাজার জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। আজ শুক্রবারও (২৩ এপ্রিল) ৮০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্থিত্ব পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৭৪ জন নতুন শনাক্ত হয়েছে। ৬ জন পুরাতন রোগী, যাদের ফলোআপ রিপোর্টে আবারও করোনা ‘পজিটিভ’ এসেছে।
শুক্রবার শনাক্ত হওয়া ৮০ জনের মধ্যে ১১ জন রয়েছেন রোহিঙ্গা শরণার্থী।
একদিন আগে বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৬৬ জন। যাদের মধ্যে ৬১ জন ছিলেন নতুন রোগী। আর রোহিঙ্গা শরণার্থী ছিলেন দুইজন।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ ও রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অনুপম বড়ুয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে, মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার এই তিনদিনে (২০-২২ এপ্রিল) ১৮৬ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এছাড়াও ১৮ জন পুরাতন রোগীর ফলোআপ বিপোর্টে আবারও ‘পজিটিভ’ এসেছিল। এই তিনদিনে বরাবরের মতোই কক্সবাজার সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৮৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে টানা চারদিনে দুই হাজার ২২৫ জন সন্দেহভাজন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে ২৬০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তবে নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার একজন, পার্বত্য বান্দরবান জেলার দুইজন ও চট্টগ্রামের ৫ জন রোগী আছেন।
তবে গেল চারদিনে এক হাজার ৯৭১ জন রোগীর রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ পাওয়া গেছে।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ সুত্র মতে, শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) শনাক্ত হওয়া ৮০ জনের মধ্যে ৭৪ জন নতুন রোগী ও ৬ জন পুরাতন রোগী। তাদের মধ্যে কক্সবাজার সদরে সর্বাধিক ২৭ জন, উখিয়ায় ৮ জন, টেকনাফে দুইজন, পেকুয়ায় একজন ও মহেশখালীতে দ্বিতীয় সর্বাধিক ২০ জন রয়েছেন। এছাড়াও চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ৫ জন আছেন। তাছাড়াও রোহিঙ্গা শরণার্থী আছেন ১১ জন।
অপরদিকে, আগের তিনদিনে কক্সবাজার সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৮৭ জন, রামু উপজেলায় ৮ জন, উখিয়া উপজেলায় ৪৫ জন, টেকনাফ উপজেলায় ১৯ জন, চকরিয়া উপজেলায় ১০ জন, পেকুয়া উপজেলায় ৩ জন, মহেশখালী উপজেলায় ৫ জন, কুতুবদিয়া উপজেলায় একজন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী আছেন।
সুত্র মতে, দিনওয়ারি হিসাবে দেখা যায়, ২০ এপ্রিল ৫৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্থিত্ব মিলেছে। এদের মধ্যে ৬৪ জন নতুন রোগী ও ৯ জন পুরাতন রোগী। তাদের মধ্যে কক্সবাজার সদরে ৩৬ জন, রামুতে ৩ জন, উখিয়ায় ১১ জন, টেকনাফে ৫ জন, চকরিয়ায় ৪ জন, পেকুয়ায় একজন ও মহেশখালীতে একজন। এদিন ৩ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর শরীরে করোনাভাইরাসের অস্থিত্ব মিলেছে।
বুধবার (২১ এপ্রিল) ৫৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্থিত্ব পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ৬১ জন নতুন ও ৪ জন পুরাতন রোগী। তাদের মধ্যে কক্সবাজার সদরে ২৮ জন, রামুতে ৩ জন, উখিয়ায় ১২ জন, টেকনাফে ৬ জন, চকরিয়ায় ৫ জন, পেকুয়ায় একজন, কুতুবদিয়ায় একজন ও মহেশখালীতে ৪ জন। এছাড়াও চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার একজন রোগী আছেন। এ দিন রোহিঙ্গা কোন রোগীর করোনা শনাক্ত হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) ৬৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্থিত্ব মিলেছে। এদের মধ্যে ৬১ জন নতুন রোগী ও ৫ জন ফলোআপ রোগী। তাদের মধ্যে কক্সবাজার সদরে ২৩ জন, রামুতে দুইজন, উখিয়ায় ২২ জন, টেকনাফে ৮ জন, চকরিয়ায় একজন ও পেকুয়ায় একজন। এছাড়াও পার্বত্য বান্দরবান জেলার দুইজন রোগী আছেন। এ দিন দুইজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর শরীরেও করোনার অস্থিত্ব পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে কক্সবাজার জেলায় এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৮৫৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৩ হাজার ৮৫৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের একাধিক সুত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় ৭ হাজার ৮৫৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৩ হাজার ৮৫৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যা মোট করোনা রোগীর প্রায় অর্ধেক।
অপরদিকে গত ২২ এপ্রিল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কক্সবাজার জেলায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৯০ জন। তাদের মধ্যে ১১ জন রোহিঙ্গা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-