বিনোদন ডেস্ক •
ঢাকাই সিনেমার এক অনন্য নাম ওয়াসিম। ’৭০ ও ’৮০ দশকে যার জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। ছিলেন সুঠাম, সুদর্শন ও পরিপূর্ণ এক নায়ক। শতাধিক ছবিতে অভিনয় করে নিজেকে কিংবদন্তি অভিনেতার সারিতে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের এ অভিনেতা।
সেই সোনালি যাত্রার অবসান ঘটলো শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে। রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওয়াসিম।
হাজারো ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় এ অভিনেতা। মৃত্যুর সময় নিয়ে গেলেন পুরনো এক ক্ষোভ।
গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়াসিম জানিয়েছিলেন, চলচ্চিত্র জীবনে অর্থ, যশ, খ্যাতি সবই পেয়েছেন তিনি। কোনো অপ্রাপ্তি নেই তার। তবে তার একটি ক্ষোভ রয়েছে। সেটি হলো ১৯৭৯ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার নাম বাদ দিয়ে অন্যান্য সবার নাম ঘোষণা করে পুরস্কার দেয়া হয়েছিল।
জনপ্রিয় এ নায়কের দাবি, ‘ঈমান’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তাকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে তাকে বাদ দেয়া হয়। সেই ক্ষোভের বেদনা তিনি মৃত্যু পর্যন্ত বয়ে বেড়িয়েছেন।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার না পেলেও ওয়াসিম নিজেকে অধিষ্ঠিত করেছিলেন সুপারস্টারের আসনে। ক্যারিয়ারে দেড় শতাধিক সিনেমা করেছেন৷ যার মধ্যে ৯০ শতাংশই সুপারহিট।
১৯৭২ সালে এসএম শফী পরিচালিত ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’ সিনেমায় ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিষেক হয়েছিল নায়ক ওয়াসিমের। সেই সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
নায়ক হিসেবে তার প্রথম সিনেমা ‘রাতের পর দিন’। মহসিন পরিচালিত এ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৪ সালে। মুক্তির পর রাতারাতি সুপারস্টার বনে যান ওয়াসিম। এরপর অ্যাকশন এবং ফোক-ফ্যান্টাসি ধাঁচের অনেকগুলো সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
কিংবদন্তি এ নায়কের অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো- দ্য রেইন, ডাকু মনসুর, জিঘাংসা, কে আসল কে নকল, বাহাদুর, দোস্ত দুশমন, মানসী, দুই রাজকুমার, সওদাগর, নরম গরম, ইমান, রাতের পর দিন, আসামি হাজির, মিস লোলিতা, রাজ দুলারী, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, লুটেরা, লাল মেম সাহেব, বেদ্বীন, জীবন সাথী, রাজনন্দিনী, রাজমহল, বিনি সুতার মালা, বানজারান।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-