কক্সবাজার প্রতিনিধি •
প্রাণঘাতি কোভিড-১৯ মহামারির সংক্রমণ ঠেকাতে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে চলছে তৃতীয় দিনের লকডাউন। দোকানপাট-বিপণিবিতান বন্ধই রয়েছে।তবে কাঁচাবাজারে সকাল থেকে লোকজনের ভিড় লেগে আছে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে না।
লকডাউনের প্রভাবে কক্সবাজার শহরের বাজারগুলোতে সবজির দাম লাগামহীন। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব ধরনের সবজি। সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। শসা, ঢেঁড়স ও বরবটির কেজিও ৫০-এর উপরে। যা সপ্তাহ-দশ দিন আগেও ছিলো নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সহনীয় পর্যায়ে।
শহরের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মান ও বাজারভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা। গত সপ্তাহে বেশিরভাগ বাজারে বেগুনের কেজি ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম বেড়ে ৭০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
শহরের বাহাড়ছড়া বাজার থেকে বেগুন বিক্রি করা একজন বলেন, রোজার প্রথম দিন থেকে বেগুনের দাম বেড়েছে। প্রথম রোজায় বেগুনের কেজি ৭০ টাকা বিক্রি করি। পাইকারিতে দাম বাড়ায় এখন ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, রোজায় বরাবরই বেগুনের চাহিদা বেশি থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণেই বেগুনের এমন দাম বেড়েছে। দাম বাড়লেও বাজারে বেগুনের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।
শুধু বেগুনই নয়, দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে শসা,পটল, বরবটি, শিম, ঢ়েঁড়স, টমেটো,লেবুসহ অন্যান্য সবজিগুলোও।
পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। ঢ়েঁড়সের কেজিও বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
৪০ টাকা কেজিতে নেমে আসা শিমের কেজি আবার ৬০ টাকায় উঠেছে। ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউয়ের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ধুন্দুলের দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
রোজায় চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে পাকা টমেটো ও শসার। গত সপ্তাহে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শসার দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সবজির পাশাপাশি দাম বেড়েছে শাকের। বাজার থেকে এখন শাক এক আটি কিনতে ১৫ টাকা বা তার বেশি গুনতে হচ্ছে। পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লাল শাক, সবুজ শাক, পাট ও কলমি শাক। –
সবজির দাম নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে শহরের এক বাসিন্দা জুনাইদ বলেন, রোজা আর লকডাউনকে হাতিয়ার করে ব্যবসায়ীরা সবকিছুর দাম বাড়ি দিয়েছে। এই মহামারির মধ্যেও ব্যবসায়ীরা এই অনৈতিক কাজ করছে। আল্লাহ এটা সহ্য করবে না।
আলী নামের আরেক ক্রেতা বলেন, বাজারে কারো কোনো তদারকি নেই। এ কারণে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের উচিত দ্রুত বাজার তদারকিতে নামা প্রয়োজন। তা না হলে কষ্টে থাকা মানুষগুলোর কষ্ট আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।
তবে সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন- সবজির দাম এমনিতেই বাড়ছিল। রোজা আর লকডাউনের কারণে দাম আরও বেড়েছে।
খুচরো বিক্রেতাদের বক্তব্য- সবাই ভাবে আমরা সবজির দাম বেশি রাখছি। আড়তে গেলেই টের পাবেন সবজির দাম কী হারে বেড়েছে। আমরা অল্প লাভেই সবজি বিক্রি করি। আড়তে দাম বাড়লে আমাদের তো কিছু করার নেই।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-