চট্টগ্রাম •
সেনা কর্মকর্তার মিথ্যা পরিচয় দিয়ে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে এক ভুয়া সাংবাদিককে আটক করেছে কর্তব্যরত সেনা সদস্যরা।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) রাত দশটার দিকে আহমেদ কবির নামের এ প্রতারককে আটক করে বায়েজিদ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এই সময় তার গাড়িতে একটি বেসরকারী টেলিভিশনের লগো দেখে সন্দেহ হয় গেইটে কর্মরত সেনা কর্মকর্তার মনে। সিকিউরিটি কর্মকর্তারা তাকে আটকালে সে নিজেকে সেনা কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেয়।
চট্টগ্রাম সেনানিবাসের সেনা কর্মকর্তা মেজর সাইদ গণমাধ্যমকে জানান, সেনানিবাসের গেইটে দায়িত্ব পালনরত কর্মকর্তারা তার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে আহমদ কবির শুরুতে নিজেকে সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দেয়। পরে সে নিজেকে এশিয়ান টেলিভিশনের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হিসেবে পরিচয় দিলে তাদের সন্দেহ হয়।
মেজর সাইদ মুঠোফোনে চট্টগ্রামের কয়েকজন সাংবাদিকের কাছে কবির সম্পর্কে জানতে চাইলে তারাও এশিয়ান টেলিভিশনে এই নামে কোন সাংবাদিক কর্মরত নেই বলে জানান। পরে বায়েজিদ থানায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিয়ে তাকে সোপর্দ করা হয়।
জানা গেছে, আহমেদ কবির মুলত এশিয়ান টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান বলে পরিচয় দিয়ে সাধারন মানুষের সাথে প্রতারনা করে আসছিল৷ তার বাড়ি বাঁশখালী উপজেলায়। নগরী সুগন্দা আবাসিক এলাকার একটি ভবনে অফিস করে আহমদ কবির। কখনো নিজেকে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, কখনো টিভি সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ কার্যালয়, নগরীর বিভিন্ন থানায় তার অবাধ যাতায়াত রয়েছে।
এর আগে ২০১৫ সালে নগরীর কোতোয়ালী থানায় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রতারনা করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল আহমদ কবির।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক প্রদীপ চক্রবর্তী জানান কয়েকমাস আগে এশিয়ান টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান পরিচয় দিয়ে তার সাথে দেখা করতে যায় আহমেদ কবির। পরে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে তিনি জানতে পারেন এই নামে এশিয়ান টেলিভিশনে কেউ কর্মরত নেই।
জানতে চাইলে এশিয়ান টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক পলাশ জানান, ‘আহমদ কবির নামের কোন সাংবাদিক চট্টগ্রামে কর্মরত নেই। কখনো ছিল না। ‘
আজ শনিবার রাতে বায়েজিদ থানায় তাকে আটক করে নিয়ে আসলে সেখানে ভীড় জমান চট্টগ্রামের বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মি। তারা জানান, আটককৃত প্রতারকের ছবি তুলতে চাইলে থানায় কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার বাধা দেন। এসময় থানায় উপস্থিত না থাকার কারনে বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ওসি তদন্ত কারো সাথেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি সংবাদকর্মীদের।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, কিছুদিন আগে টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তার কাছে তদবির নিয়ে যান আহমদ কবির। পরে কবিরের পরিচয় জানতে পেরে তাকে তিরস্কারও করেছিলেন এই কর্মকর্তা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-