মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী •
শিশু বলাৎকার (ধর্ষণ) এর দায়ে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ জজ) জেবুন্নাহার আয়শা একজন বলাৎকারকারীকে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও অর্ধ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেছেন। অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক। রোববার ৭ ফেব্রুয়ারী সকালে বিজ্ঞ বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।
কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর স্পেশাল পিপি এডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউর রহমান রেজা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামীর নাম মাওলানা মনছুর আলম (৪০)। তার পিতার নাম : আবদুল মজিদ। তার বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের মধ্যম গজালিয়া গ্রামে। ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধিত-২০০৩ সাল) এর ৯(১) ধারা অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিজ্ঞ বিচারক জেবুন্নাহার আয়শা আসামী মাওলানা মনছুর আলমকে এ সাজা প্রদান করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ হলো-২০১৮ সালের ৭ জুলাই রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছেংছড়ি গ্রামের আবদু সালামের শিশুপুত্র মোবারক (১০) দোছড়ি জামে মসজিদে রাতে অন্যান্যদের সাথে মাওলানা মনছুর আলমের কাছ থেকে কোরআন শিক্ষা নিয়ে মসজিদে ঘুমিয়ে পড়ে। পরে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে মাওলানা মনছুর আলম শিশু মোবারককে জোরপূর্বক বলৎকার (ধর্ষন) করে। এ ঘটনায় মোবারকের পিতা আব্দু সালাম বাদী হয়ে মাওলানা মনছুর আলমকে আসামী করে রামু থানায় ২০১৮ সালের ১০ জুলাই একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর : ১৫/২০১৮ (রামু), জিআর মামলা নম্বর ২১৮/২০১৮ ইংরেজি (রামু) এবং নারী মামলা নম্বর : ৪০/২০১৯ ইংরেজি।
মামলায় মাওলানা মনছুর আলম ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় নিজে দোষ স্বীকার করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দী দেন। ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারী এ মামলার অভিযোগ গঠন করে ১০ জন সাক্ষী, আসামীপক্ষে ৫ জন সাফাইসাক্ষী নেওয়া হয়। জেরা, যুক্তিতর্ক শেষে বিজ্ঞ বিচারক মামলায় উক্ত রায় ঘোষনা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর স্পেশাল পিপি এডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউর রহমান রেজা ও আসামীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
মামলার রায়ে আসামীর সাজা নিশ্চিত করতে পারায় স্পেশাল পিপি এডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউর রহমান রেজা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আদালতের এ রায়ে ভিকটিম ও বাদী ন্যায় বিচার পেয়েছেন। যা সমাজের দুশ্চরিত্রবান লোকজনের অপরাধ ঠেকাতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন-স্পেশাল পিপি এডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউর রহমান রেজা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-