বিশেষ প্রতিবেদক •
জেলাবাসীর দৃষ্টি এখন কক্সবাজারের তিনটি পৌরসভা নির্বাচনের দিকে। কারা পাচ্ছেন নৌকা প্রতীক তা নিয়ে চলছে চুল ছেড়া বিশ্লেষন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে মহেশখালী পৌরসভায় তীব্র প্রতিযোগীতা সৃষ্টি হলেও চকরিয়া ও টেকনাফ পৌরসভায় তেমন প্রতিযোগীতা নেই। আলোচনায় শীর্ষে রয়েছে মহেশখালী পৌরসভা। তবে পৌর এলাকার মানুষ ধানের শীষ প্রতীকে তেমন ভোট দেয়না বলে দাবী করেছেন উপজেলা বিএনপি সভাপতি আবু বক্কর ছিদ্দিক।
নির্বাচন কমিশনের একটি সুত্রে জানা যায়, চলতি সপ্তাহে ঘোষিত হচ্ছে কক্সবাজারের ৩টি পৌরসভা নির্বাচন। কক্সবাজার সদর ছাড়া মহেশখালী, চকরিয়া ও টেকনাফ পৌরসভার নির্বাচন মার্চ মাসেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদিকে চকরিয়া পৌরসভায় বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকলেও সাবেক ছাত্রনেতা জামাল উদ্দিন জয়নাল, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম লিটু, জামাল উদ্দিন জয়নাল ও মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছেন।
টেকনাফ পৌরসভায় বর্তমান মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলাম ছাড়া উল্লেখযোগ্য মনোনয়ন প্রত্যাশী কেউ নেই। তিনিই মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন।
এখন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে মহেশখালী পৌরসভা। জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য বর্তমান মেয়র মকছুদ মিয়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকলেও তাঁর মনোনয়ন ঠেকাতে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন একটি শক্তিশালী পক্ষ। ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপুর্ণ স্থানে বর্তমান মেয়র মকছুদ মিয়ার জীবনবৃত্তান্তসহ পারিবারিক পরিচিতি সম্বলিত পোস্টার লাগানো হয়েছে। এছাড়া এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানালেন একজন সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র। বর্তমান মেয়রের সাথে মনোনয়ন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান, ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক নাছির উদ্দিন।
পৌর বাসিন্দাদের মতে, বিগত ১০ বছরে মহেশখালী পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পৌর এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো এখন দৃশ্যমান। উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে প্রতিটি ক্ষেত্রে। তারপরও শক্তিশালী প্রতিপক্ষ পিছু ছাড়ছে না। দলের মনোনয়ন ভাগিয়ে নিতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে এই পক্ষটি।
এগিকে মহেশখালী পৌরসভা নির্বাচন হলেই দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে পৌর এলাকা। পুটিবিলা বনাম গোরকঘাটায় পরিণত হয় নির্বাচন। দুই এলাকার বাসিন্দারাও এখন নিজেদের সম্ভাব্য প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চলাচ্ছেন। কথা হয় গোরকঘাটার বাসিন্দা আলাউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, মকছুদ মিয়া মেয়র পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর গত পাঁচ বছরে পৌর এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাঁর পক্ষে এলাকার লোকজন ঐক্যবদ্ধ। তিনি এই এলাকার একচেটিয়া ভোট পাবেন। যা গত দুইটি নির্বাচনে পেয়েছিলেন।
পুটিবিলার এলাকার বাসিন্দা শামসুদ্দিন বলেন, গত বারের পৌর নির্বাচনে সরওয়ার আজমকে অনেকটা জোরপুুর্বক হারানো হয়েছে। তিনি এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। গত নির্বাচনে ঘোনার পাড়া কেন্দ্রে একজনকে হত্যা করা হয়েছে। সাধারণ ভোটাররা তাঁর রক্তের ঋণ ভোটের মাধ্যমে দিতে চায়। মনোনয়ন যিনিই পান না কেন নির্বাচন হবে এলাকা ভিত্তিক।
মহেশখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, পৌর এলাকায় অধিকাংশ সংখ্যালগু হওয়ায় বিএনপি প্রার্থীরা নির্বাচন করতে ভয় পায়। তিনি নির্বাচন করবেন না জানিয়ে বলেন, এখনো অন্য কেউ বিএনপি থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, কেন্দ্রের নির্দেশনামতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হবে। মনোনয়ন দেবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এই ছাড়া কিছু আর বলার নেই।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-