সাইফুল ইসলাম •
কক্সবাজার শহরজুড়ে আবারো ভয়ংকর ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসী চক্র তৎপর হয়ে উঠেছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত নামতেই কিংবা ভোরে অনেক অলিগলি নিয়ন্ত্রণ করে এলাকা ভিত্তিক লোকাল ছিনতাকারী ও সন্ত্রাসীরা। সম্প্রতি জেল কাটা আসামীরা জামিনে বের হয়ে আবারো নানা অপরাধে জড়িত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এতে অনেক রাস্তা রাতের বেলায় খুবই বিপদজনক। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের কোন তৎপরতাই তেমন নেই বলে দাবি সচেতন মহলের।
স্থানীয়রা জানান, বিশেষ করে কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির কোন ভুমিকাই দেখা যাচ্ছেনা। মূলত শহরের বেশির ভাগ অপরাধীরাই বৃহত্তর দক্ষিণ রুমালিয়রছড়াস্থ সাহিত্যিকা পল্লী, পল্যাইন্না কাটা, কাটা পাহাড়, এবিছিঘোনা, সমিতি বাজার এলাকায় বিচরণ করে থাকে। ওই সব এলাকা রাতে-দিনে তাদের দখলে। কিন্তু শহর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশেরা ঘটনার এক ঘন্টা/আদা ঘন্টা পর ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যায়। অথচ ওই পুলিশ ফাঁড়ি ওখানে স্থাপন করেছেন মূলত সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। কিন্তু তারাও যদি জিমিয়ে থাকে অপরাধীদের অপরাধ কর্মকান্ড দিনের পর দিন বাড়তেই থাকবে।
মাসের মধ্যেই ওই সব এলাকায় অনন্ত তিনটি হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। এছাড়াও অনেকেই আবার ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এছাড়াও যেসব ইয়াবা ব্যসায়ীরা রয়েছে তারাও বেপরোয়া ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে পূর্বে অনেক মাদক ব্যবসায়ীরা আড়ালে ছিলো। বর্তমানে তারাও মাদক ব্যবসা নিয়ে সক্রিয় রয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বিশেষ করে রাতে লোডশেডিংয়ের সময় ওই সব রাস্তা ও গলিতে পর্যটক ও পথচারীদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অপরাধীরাই বিবরণ করে থাকে বিজিবি ক্যাম্প এলাকার অলিগলিতে, সাহিত্যিকা পল্লী এলাকায়, বৃহত্তরদক্ষিণ রুমালিয়ারছরা বিভিন্ন উপসড়কে, পাহাড়তলী এলাকার, ঘোনাপাড়ায়, হাসপাতাল রোড, কালুর দোকান, বার্মিজ মার্কেট, বিজিবি ক্যাম্পের নারিকেল বাগান, প্রধান সড়কের সাবমেরিন ক্যাবল এলাকা, সিটি কলেজের সামনে, হাশেমিয়া মাদ্রাসা পয়েন্ট, কলাতলীর প্রধান সড়কের টিএনটি অফিসের সামনে, আদর্শ গ্রামের সামনেসহ শহরের ডায়াবেটিক পয়েন্ট, কস্তুরাঘাট এলাকা, থানার পিছন রোড, ফায়ার সার্ভিস মসজিদ রোড, গোলদিঘীর পাড়, সদর হাসপাতাল সংলগ্ন সড়ক, কক্সবাজার কেজি ও মডেল হাই স্কুল সড়ক, ফুলবাগ সড়ক, হোটেল নিদমহল সংলগ্ন গলি ও শেখ রাসেল সড়কসহ কলাতলী এলাকার সী-ইন পয়েন্ট, সৈকতের হোটেল সী-ওয়ার্ল্ড রোড, বাহারছড়ার জাম্বুর মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে ছিনতাইকারীর উপদ্রব দিন দিন বেড়েই চলছে। এসব ছিনতাইকারী সিন্ডিকেট সমুদ্র সৈকত এলাকায় পর্যটকদের জীম্মি করে সবকিছু হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও জানা গেছে। এমনকি আগত পর্যটকদের অস্ত্র ও ছুরিকাঘাতের কারণে অনেকের প্রাণও চলে যাচ্ছে।
পথচারী ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ইতোমধ্যেই আইন শৃংখলা বাহিনীর অবহেলায় রাতের বেলায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। দিনদিন ছিনতাইয়ের সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত এক সপ্তাহে অন্তত ৭ থেকে ৮টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী জানায়, সন্ধ্যার পর থেকে এসব সড়ক ও গলিতে ছিনতাইকারী দল বেঁধে কিংবা একা ঘুরাফেরা করে। সুযোগ বুঝে পথচারীদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয় এরা। বিশেষ করে লোডশেডিং চলাকালে এসব স্থানে ছিনতাইকারীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, কয়েকদিন আগে শহরের সিটি কলেজ
সংলগ্ন প্রধান সড়কে চকরিয়া থেকে থেকে আসা জসিম উদ্দীন নামে এক ব্যক্তিকে অস্ত্রের মুখে জীম্মি করে দামী মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ছিনতাইকারী চক্র।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি যোগদান করার পর সম্প্রতি অনেক অপরাধীকে আটক করেছি। কিন্তু
প্রতিনিয়তেই অপরাধীদের ধরার জন্য শহর পুলিশ ফাঁড়ির অভিযান অব্যাহত আছে। যেখানে অপরাধ সংঘঠিত হয় সেখানেই দ্রুত অভিযানে পরিচালনা করা হয়
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-