ডেস্ক রিপোর্ট • বগুড়ায় মদপানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ এ দাঁড়িয়েছে। গত রোববার থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
মৃতরা হলেন রমজান আলী, সুমন রবিদাস, সুমন রবিদাসের বাবা প্রেমনাথ ও চাচা রামনাথ।
অন্যরা হলেন, পলাশ মিয়া, আব্দুর রহিম, সাজু, মোজাহার আলী, আব্দুল জলিল, জুলফিকার রহমান, আবুল কালাম, আব্দুর রহিম, আব্দুর রাজ্জাক ও মেহেদী হাসান, আব্দুল আহাদ ও লাজু মিয়া।
মৃতরা বগুড়া সদর উপজেলায় তিনমাথা, কালিতলা, ফুলবাড়ি ও কাটনারপাড়া এলাকায় এবং কাহালু, শাজাহানপুর ও সারিয়াকান্দি উপজেলায় পৃথকভাবে মদপান করেন।
মৃত আব্দুর রাজ্জাক, মেহেদী হাসান ও আব্দুল আহাদ বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার বাসিন্দা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেহেদি ও আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যু হয়। এর আগে সোমবার দুপুরে আব্দুল আহাদের মৃত্যু হয়েছে।
শাজাহনপুর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হতে মৃতদেহগুলো ময়নাতদন্ত জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মদপানে মৃত লাজু মিয়া সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটফুলবাড়ী দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন। লাজু পেশায় রিকশাচালক ও পাশাপাশি অ্যালকোহল বিক্রি করতেন। তার ভাই শফিকুলও মদপান করে অসুস্থ অবস্থায় পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, লাজু ও শফিকুলের মঙ্গলবার সকাল থেকেই বুক জালা-পোড়া করছিল বলে তারা চিৎকার করছিলেন। এ অবস্থায় লাজুকে হাসপাতাল নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আর শফিকুল পলাতক রয়েছেন।
পুলিশের দাবি, মৃতদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বিষাক্ত মদপানে। আর বাকীরা স্টোক করে মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তির স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশের নিশ্চিত করা তিনজন বাদে অন্যরাও বিষাক্ত মদ পান করেছিলেন।
আর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মারা গেছেন শহরের তিনমাথা এলাকার সুমন রবিদাসের বাবা প্রেমনাথ ও চাচা রামনাথ। এ ছাড়া সোমবার বিকেলের দিকে বগুড়ার দক্ষিণ ফুলবাড়ি এলাকার রিকশাচালক আব্দুল জলিল, সদরের ফাঁপোর এলাকার রিকশাচালক জুলফিকার রহমান ও কাহালু উলট্ট মহল্লার আবু কালাম মারা যান।
তাদের মৃত্যুর বিষয়টি মঙ্গলবার সকালে বগুড়ার সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ বলছে, আব্দুল জলিল, জুলফিকার রহমান ও আবুল কালাম নিজ নিজ বাড়িতে মারা গেছেন।
তাদের স্বজনেরা বলছেন, বিষাক্ত মদ তারাও খেয়েছিলেন। আবু কালাম বাদে অন্য দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
বিষাক্ত মদ খেয়ে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন পলাশের ভাই আতিকুর রহমান পায়েল, পায়েলের বন্ধু আইয়ুব, শিববাটি এলাকার হোটেল শ্রমিক রঞ্জু। এছাড়াও শাজাহানপুর উপজেলার অন্তত ৫জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে বিষাক্ত মদ বিক্রির বিষয়ে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা বাদী রঞ্জুর বড়ভাই মনোয়ার। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিরা হলেন, খান হোমিও হলের মালিক শাহিনুর রহমান শাহীন, পারুল ও পুনম হোমিও হলের মালিক নুর আলম ও নুর নবী। নুর আর নুর নবী আপন দুইভাই।
সোমবার রাতে মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ।
জানা গেছে, বগুড়ার ফুলবাড়ী এলাকার পলাশ মিয়া সোমবার ১১টার দিকে মেডিকেলে নেয়ার পর তিনি মারা যান। পলাশের ভাই পায়েল ও তার বন্ধু আইয়ুব শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি।
হাসপাতালেই পলাশের ভাগ্নে বাধন বলেন, জন্মদিনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ওই সন্ধ্যায় তার মামার সাথে আব্দুর রহিম নামের আরেকজনও মদ পান করেন। পরে তিনি তার বাড়ি ফুলবাড়ী দক্ষিণ পাড়ায় গত রোববার মারা যান।
নিহত সুমন রবিদাসের ভাই সুজন রবিদাস বলেন, রমজান তাদের এলাকার বাসিন্দা। তারা শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকায় একটি হোমিও দোকান থেকে স্পিরিট কিনে খান। এটা খেয়েই রমজান অসুস্থ হয়ে তার নিজ বাড়িতে মারা যান।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-