রামু প্রতিনিধি •
রামুর রশিদনগরে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের ৩ নেতার উপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বিতর্কিত ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম ও তার সহযোগিদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা এ ঘটনার ৮দিন পার হলেও এখনো কোন হামলাকারি গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করলে আরো বৃহৎ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করার ঘোষনা দেন।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকাল চারটায় রশিদনগর মামুন মিয়ার বাজারে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগ ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে এ প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। রশিদনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বজল আহমদ বাবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-রশিদনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সায়েম মোহাম্মদ শাহীন, পানিরছড়া বৃহত্তর মামুন মিয়ার বাজার ব্যবসায়ি কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি ও রশিদনগর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুবিনুর রহমান, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বার কোহিনুর আকতার, রশিদনগর ইউনিয়ন শ্রমিকলীগ সভাপতি মো. বাবুল, রশিদনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ন সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান, ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর মিয়া, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ন সম্পাদক হুমায়ন কবির, ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. কাবুল প্রমূখ। সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন-রশিদনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ খালেক।
সমাবেশে বক্তারা বলেন- রশিদনগরবাসী এখন সন্ত্রাসী শাহ আলম বাহিনীর কাছে জিম্মি। বিগত ৫ বছর ধরে শাহ আলম ক্ষমতাকে পূঁজি করে জমি দখল, পাহাড় নিধন, ত্রাণ চুরি, নিরীহ লোকজনকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি সহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা এবং মামলায় জড়িয়ে হয়রানি চেয়ারম্যান শাহ আলমের নেশায় পরিনত হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় রশিদনগর ছাত্রলীগ সভাপতি নজিবুল আলম, সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মিজানুল করিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়েছে। রশিদনগরের ইতিহাসে এমন বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা অতীতে কখনো ঘটেনি। এ হামলায় নেতৃত্বদানকারী চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ জড়িতদের রশিদনগরের মানুষ কখনো ছাড় দেবে না। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
বক্তারা আরো বলেন-হামলার শিকার ছাত্রলীগ নেতা নজিব ও সাইফুল এখনো চমেক হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। অথচ ঘটনার ৮ দিন পার হলেও হামলাকারি সন্ত্রাসীর গ্রেফতার হয়নি। অতীতেও চেয়ারম্যান শাহ আলম ও তার লালিত বাহিনীর অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী সহ অসংখ্য মানুষ মিথ্যা মামলা এবং হামলার শিকার হয়েছে।
জানা গেছে, বিতর্কিত চেয়ারম্যান শাহ আলমের নেতৃত্বে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলার শিকার রশিদনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নজিবুল আলম ও সহ সভাপতি সাইফুল ইসলামের অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। বর্তমানে তারা চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছে। এ প্রতিবাদে হামলাকারি চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে এলাকায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তুরের জনতার বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য গত ২৩ জানুয়ারি রামুর রশিদনগর ইউনিয়নের পানিরছড়া মামুন মিয়ার বাজারে সন্ত্রাসী হামলায় গুরতর আহত হন রশিদনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নজিবুল আলম, সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মিজানুল করিম।
এ ঘটনায় আহত নজিবুল আলমের ভাই শাহ আলম বাদি হয়ে ২৪ জানুয়ারি রামু থানায় মামলা (নং ২৭) দায়ের করেন। মামলায় রশিদনগর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-