আল জাবের •
কক্সবাজারের বিভিন্ন রুটে যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাস । রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরি এলপি গ্যাস ব্যবহার করে জেলার বিভিন্ন রুটে অবৈধভাবে চলাচল করছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা। এই গ্যাস দিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচলের সময় চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন চালক ও যাত্রীরা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই যেনতেনভাবে গাড়িতে এ ধরনের গ্যাস ব্যবহারের কারণে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের প্রকৌশলীরা। ঝুঁকি থাকার পরও অবৈধভাবে অটোরিকশায় এলপি গ্যাস ব্যবহার করে মাসের পর মাস যাত্রী পরিবহন করার পরও জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে।
প্রশাসনের তদারকি না থাকায় রান্না কাজে ব্যবহ্নত এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে চলছে সিএনজি এমনটি জানান সচেতন মহল ।
জানা যায়, জেলা শহর থেকে দূরে অবস্থিত বিভিন্ন এলাকায় যেখানে সিএনজি স্টেশন নেই সেই সব স্থানে কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) না থাকায় রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার নিজেদের অটোরিকশায় ব্যবহার করছেন চালকরা । পেট্রোলের চেয়ে এই গ্যাস ব্যবহার সাশ্রয়ী হওয়ায় চরম ঝুঁকি থাকার পরও সেটি করছেন তারা ।
স্থানীয় মেকানিকদের মাধ্যমে সিএনজি অটোরিকশায় রান্না কাজে ব্যবহৃত সিলিন্ডার সংযোগ বসাচ্ছেন গাড়ির মালিক ও চালকরা। সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কক্সবাজার সদর উপজেলা থেকে শুরু করে চকরিয়া , মহেশখালী , উখিয়া , টেকনাফ , রামু , পেকুয়া , কুতুবদিয়া এবং জেলার উপক‚লীয় অঞ্চল বদরখালী সড়কে চলাচলকারী প্রতিটি সিএনজি অটোরিকশার সিটের পেছনে একটি করে রান্নার কাজে ব্যবহৃত সিলিন্ডার রয়েছে । সেই সিলিন্ডার থেকে প্লাস্টিকের নল দিয়ে বিশেষ কায়দায় গ্যাস ইঞ্জিনে নিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ।
অনেকদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজটি করছেন এই রুটের চালক ও মালিকরা। এর ঝুঁকির দিকটি সম্পর্কে অবগত ও সচেতন না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এসব যান ব্যবহার করছেন সাধারণ যাত্রীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চালক বলেন, গাড়িতে পেট্রোল ব্যবহার করলে জ্বালানি খরচ বেশি পড়ে, তাই বিশেষ কায়দায় গাড়িতে রান্নার সিলিন্ডার ব্যবহার করছি। রান্নার সিলিন্ডার গাড়িতে ব্যবহার করলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আছে, তারপরও কেন ব্যবহার করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঝুঁকির বিষয়টি আমাদের জানা নেই বলে ওই চালক জানান। এদিকে, চকরিয়া-বদরখালী ও মহেশখালী সড়কসহ প্রত্যন্ত এলাকার বিভিন্ন সড়কে সিএনজি অটোরিকশায় রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অপর দিকে পাওয়ার বিষয়ক প্রকৌশলীদের মতে, এলপিজি আর সিএনজি গ্যাসের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। সিএনজিকে বাতাস দিয়ে পাতলা করে সিলিন্ডারে ভরা হয়, যাতে দুর্ঘটনা ঝুঁকি কমে ও সিলিন্ডার ঠাণ্ডা থাকে । তারা আরো বলেন, রান্নার কাজে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার গাড়িতে ব্যবহার করলে দুর্ঘটনা ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায় । মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, রান্না কাজে ব্যবহ্নত গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে যে সব সিএনজি চালাচ্ছে এসবের বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-