উখিয়ায় ইউপি নির্বাচন নিয়ে কেন এত আগ্রহ: নেপথ্যে কি?

হুমায়ুন কবির জুশান উখিয়া •


উন্নয়নের পাশাপাশি সেবার ভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদ। নাগরিক জীবনের সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায়। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া-টেকনাফ এনজিওদের কারণে অনেক মানুষের কাছে কক্সবাজার যেন মধ্যপ্রাচ্য।

এনজিওতে চাকরি যারা করেন তাদের বেতন মধ্যপ্রাচ্যের চেয়েও কম না। এনজিওদের সাথে চেয়ারম্যান মেম্বারদের রয়েছে সখ্যতা। তাছাড়া এখানে মিয়ানমার থেকে আসা মরণ নেশা ইয়াবার সহজ লভ্যতা রয়েছে।

নেতা বা জনপ্রতিনিধি হতে পারলেই ইয়াবার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। সত্যিকারের নেতা বা চেয়ারম্যান মেম্বাররা এতে বিব্রতবোধ করেন।

উখিয়া-টেকনাফের অধিকাংশ নেতা বা জনপ্রতিনিধি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি। ইয়াবা ব্যবসা করে অনেক জনপ্রতিনিধি হয়েছেন কোটিপতি। এ কারণে এখানে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নব্য কোটিপতি টাকাওয়ালাদের আগ্রহ বাড়ছে। মানুষের সেবার মান উন্নত করতে অন্য স্থানীয় প্রতিষ্ঠান গুলোর মতো এখন প্রতিযোগিতায় রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। পাঁচ বছর পর এ প্রতিযোগিতা হয়।

এই নির্বাচনকে ঘিরে উখিয়ায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন মুখর। উখিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় প্রার্থীরা হিসাব-নিকাশ করতে শুরু করেছে।

স্থানীয়রা এবার ইয়াবা কারবারি ও নব্য কোটিপতিদের বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছেন।

রাজাপালং ইউনিয়নের নুরুল কবির নামের এক ভোটার জানান, আমাদের এলাকায় একজন মেম্বার প্রার্থী কোটি টাকা খরচ করার মতো ক্ষমতা রাখে।

পালংখালী ইউনিয়নের বর্তমান একাধিক মেম্বার ইয়াবাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছেন। জেলও খেঁটেছেন কিছুদিন পর আবার বেরিয়ে আসেন।

সর্বশেষ কক্সবাজার -টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে রেজুখাল যৌথ চেকপোস্টের বিজিবি সদস্যরা যাত্রীবাহী সিএনজি গাড়ী তল্লাশী চালিয়ে ১শ ৩০পিস ইয়াবা সহ এক মহিলা মাদক কারবারিকে আটক করেছে।

আটককৃত মহিলা হলেন, উখিয়া উপজেলার রুমখাঁ মনির মার্কেট এলাকার ফজল করিমের স্ত্রী খুরশিদা করিম (৪৮)।

তিনি উখিয়া উপজেলার সাবেক মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী ও হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য ছিলেন।

১৩ই জানুয়ারি (বুধবার) বেলা ১২টার দিকে কক্সবাজারগামী যাত্রীবাহি সিএনজি গাড়ী তল্লাশী চালালে মহিলার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ১শ ৩০পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এসময় তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল সেট ও নগদ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

রেজুখাল যৌথ চেকপোস্টের নায়েক সাইফুল ইসলাম সত্যতা স্বীকার করেন। সচেতন ভোটার নুরুল আলম বলেন, এবার উখিয়ায় পাঁচটি ইউনিয়নের নব্য কোটিপতিরা চেয়ারম্যান ও মেম্বার হতে তৎপরতা শুরু করেছেন। আমরা সচেতন ভোটাররা এবার যোগ্য প্রার্থী দেখে চেয়ারম্যান মেম্বার নির্বাচিত করবো। মার্চে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এখন থেকে উখিয়ায় নির্বাচনী হাওয়ায় গোটা নির্বাচনী এলাকা যেন দোল খাচ্ছে।

ভোটারদের বিভিন্ন ধরণের আবেগ-অনুভূতির মধ্যে হিসাব নিকাশ ও ভোটারদের বাগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি আওয়ামীলীগ প্রার্থী এগিয়ে আছে। তবে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীর তৎপরতাও কমতি নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দোয়া চেয়ে প্রচারণায়ও মনোযোগী প্রার্থীরা।

আরও খবর