নারীরা বিয়ের কাজী হতে পারবেন না, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ

ডেস্ক রিপোর্ট •

বাংলাদেশের সামাজিক ও বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার (বিয়ের কাজী) হতে পারবে না মর্মে ৬ বছর আগে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।

দিনাজপুরের এক নারী রেজিস্ট্রার প্রার্থীর রিট খারিজ করে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন।

রোববার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির।

অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, নারীরা মাসের একটি নির্দিষ্ট সময় ফিজিক্যাল ডিসকোয়ালিফেশন থাকেন। মুসলিম বিবাহ হচ্ছে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং আমাদের দেশে বেশির ভাগ বিয়ের অনুষ্ঠান হয় মসজিদে। ওই সময় নারীরা মসজিদে প্রবেশ করতে পারেন না এবং তারা নামাজও পড়তে পারেন না। বিয়ে যেহেতু একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এ বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে নারীদের দিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়। এই পর্যবেক্ষণ দিয়ে আদালত রুল খারিজ করে দিয়েছেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস কে সাইফুজ্জামান বলেন, আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রারদের কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে নারীদের প্রত্যেক মাসে একটি বিশেষ সময় আসে যে সময়টাতে ধর্মীয়ভাবেই নারীরা মসজিদে যেতে পারেন না। আবার নামাজও পড়তে পারেন না। এ রকম সময় যদি কারো বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে তো কোনো নারী যেতে পারবেন না। অন্যান্য পাবলিক অফিসে নারীরা যে কাজ করেন, আর ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসেবে কার্যক্রমটা আলাদা। বিয়ে শুধু সামাজিক অনুষ্ঠান নয়, এটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানও বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।

আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির জানান, ২০১৪ সালে দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়িয়ার পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে তিনজন নারীর নাম প্রস্তাব করে উপদেষ্টা কমিটি। তিন সদস্যর এ প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

২০১৪ সালের ১৬ জুন আইন মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে নারীদের দ্বারা নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়’ মর্মে চিঠি দিয়ে তিন সদস্যর প্যানেল বাতিল করেন।

আরও খবর