ডেস্ক রিপোর্ট •
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার নুরুল আবছার একই পদে গত এক যুগ ধরে রয়েছেন। টানা এক যুগের বেশী সময় ধরে একই স্থানে দায়িত্ব পালনের ফলে নানা অনিয়ম-দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারীতাসহ অভিযোগের শেষ নেই তার বিরুদ্ধে। রহস্যজনক কারণে বার বার বদলি ঠেকিয়ে শেকড় গেড়ে রয়েছে বহাল তবিয়তে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নূরুল আবছার বিগত ২০০৮ সালের কাছাকাছি সময়ে টেকনাফে যোগদানের পর স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিদের সাথে কৌশলে সখ্যতা গড়ে তোলে। এই সুসম্পর্কের জেরধরে সে একের পর এক অনিয়ম-দূর্নীতিতে জড়ালেও সব ধরনের শাস্তির আওতা থেকে পার পেয়ে যাচ্ছে বারবার।
সরকারী কর্মকর্তা হয়েও উপজেলা মার্কেটে দোকান বরাদ্দ নেয়া, একাডেমিক সুপারভাইজার হয়েও কোচিং বানিজ্যে লিপ্ত থাকা ও সাতকানিয়া, বান্দরবানে নামে বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি একাডেমি সুপারভাইজার হলেও তার মূল দায়িত্ব এড়িয়ে গত এক যুগ ধরেই লুটপাট কর্মসূচী নামে পরিচিত কর্মসৃজন প্রকল্পের ট্যাগ অফিসারের দায়িত্ব পালন করে সময় পার করছেন। এছাড়াও জন্মনিবন্ধন কমিটির সচিবের দায়িত্বে রয়েছে।
এতো কর্মকর্তা থাকতে দায়িত্বপূর্ণ একটি দপ্তরের কর্মকর্তা নিজ দায়িত্ব এড়িয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের ট্যাগ অফিসারের দায়িত্ব বাগিয়ে নেয়া নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন মহলের প্রশ্ন। প্রতিটি ধান্ধা বান্ধব কমিটিতে তার সংশ্লিষ্টতা বিদ্যমান।
সরকারী ভাবে প্রাইভেট বানিজ্য বন্ধ করার পরেও উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে বছরের পর বছর প্রাইভেট বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। ভয়ংকর ভাবে করোনা কালীন সময়েও তিনি প্রাইভেট বানিজ্য চালিয়ে গেছেন সমান তালে।
গেলো বছর এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগে এজাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বহিস্কৃত হলেও পরবর্তীতে অদৃশ্য কারনে তার কোন ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রশাসন।
সূত্র জানিয়েছে, জামায়াতের উর্বরভুমি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাসিন্দা হিসেবে টেকনাফে আসার পর থেকেই জামায়াতের নেতাকর্মীদের সাথে তার উঠাবসা চোখে পড়ার মতো। সেই সুবাধে হোয়ারহোয়াইক্যং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জেলে জামায়াতের নেতা নুর আহাম্মদ আনোয়ারির এলাকায় ট্যাগ অফিসারের দায়িত্ব বাগিয়ে নেন। এছাড়াও, বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কান ভারী করারসহ বিভিন্ন তদন্তের নামে উৎকোচ গ্রহণ, পরীক্ষার হলে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনে মাদ্রাসা সুপার ও স্কুল প্রধানদের নিকট থেকে উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার অভিযোগ বেশ পুরানো।
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুল আবছারের নিকট জানতে চাইলে বলেন, এই অভিযোগের ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। কারো অভিযোগ থাকলে উর্ধতন কর্মকর্তাদের বরাবরে লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।
স্থানীয় সুশীল মহলের দাবী এসব অভিযোগ তদন্ত পূর্বক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করে টেকনাফের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে তোলা এখন সময়ের দাবী।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-