রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর: গুজব রটাচ্ছে মানবাধিকার সংস্থা-গণমাধ্যম

অনলাইন ডেস্ক •

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। বিশাল অঞ্চল নিয়ে গড়ে ওঠা ভাসানচরে সব ধরনের আধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও সেখানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাঠানোর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। একই সুরে কথা বলছে কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা আল-জাজিরাকে জানান, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে।
শরণার্থীদের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সরকারের উপ-কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুদ দোজা বলেছেন, ‘শরণার্থীরা স্বেচ্ছায় যেতে চায়। তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কোন কিছুই করা হচ্ছে না।’

বিভিন্নসূত্রে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বলছে, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির কক্সবাজারের কুতুপালং। সেখানে ১১ লাখ রোহিঙ্গা গাদাগাদি করে থাকায় ঝুঁকিতে রয়েছে তারা। এ অবস্থায় তাদের পর্যায়ক্রমে ভাসানচরে পাঠাচ্ছে দেশটির সরকার।

এর আগে ১৬’শ রোহিঙ্গাকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়েই ভাসানচরে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তারা নিরাপদে এবং ভালো আছেন বলে জানিয়ে অধিকাংশ রোহিঙ্গারা শরণার্থীরা। কিন্তু মানবাধিকার সংস্থা, এনজিও এবং বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এ নিয়ে গুজব রটাচ্ছে। ভাসানচরকে দুর্গম এলাকা অ্যাখা দিয়ে সেখানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের না পাঠাতে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে সংস্থাগুলো।

এ বিষয়ে জাতিসংঘও ঘোর আপত্তি জানিয়েছে। ভাসানচরে কারিগরি সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে কৌশলগতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে সংস্থাটি।

তবে বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, তারা কেবলমাত্র যেতে ইচ্ছুক লোকদের স্থানান্তর করছে এবং এই পদক্ষেপের ফলে কক্সবাজারের শিবিরগুলিতে দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার দীর্ঘস্থায়ী ভিড় কমবে। এতে আশ্রয়রত রোহিঙ্গারা বর্তমান অবস্থা থেকে আরো ভালোভাবে থাকবে বলেও জানানো হয়।
জাতিসংঘ কর্তৃক বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত মানুষ হিসেবে বর্ণিত রোহিঙ্গা সম্প্রদায়। দেশটিতে ২০১২ সালে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় প্রাণ হারান অনেকে। রাখাইন, শানসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের মুখে জীবন বাঁচিয়ে পালিয়ে ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বিভিন্ন সময় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা আ্যমনেস্টি। টেকনাফ এবং উখিয়ায় ৩০টির বেশি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়ে আছেন তারা।

আরও খবর