মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী •
সরকারের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সদস্য, কক্সবাজারের কৃতি সন্তান মোহাম্মদ আলম (৬৩) আর নেই। দূরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় ভোর ৮ টার দিকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনীর ওয়েষ্টমিড হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি–রাজেউন।
মরহুমের ভ্রাতুষ্পুত্র সোহেল সাইফুল্লাহ জাজি (এম,এলএলবি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে কক্সবাজারের এই কৃতি সন্তান মোহাম্মদ আলম’কে সিডনীতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।
মোহাম্মদ আলম কক্সবাজার শহরের বাহারছরার গর্বিত পিতা মরহুম নজীর আহমদ ও রত্নগর্ভা মরহুমা জয়নাব বেগমের ৬ষ্ট সন্তান। মোহাম্মদ আলম কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী এডভোকেট ছালামত উল্লাহ’র ছোট ভাই। মৃত্যুকালে মোহাম্মদ আলম স্ত্রী, ২ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তান রেখে যান।
অসাধারণ মেধাবী মোহাম্মদ আলম ১৯৬৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে সম্মিলিত দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। এইসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে রেকর্ড সংখ্যক মার্ক নিয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে মানবিক বিভাগে প্রথম এবং সন্মিলিত মেধা তালিকায় ২য় স্থান অধিকার করেন। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্সে প্রথম শ্রেনীতে প্রথম হয়ে চট্টগ্রাম বিশ্বিবদ্যালয়ে একই বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করেন কক্সবাজারবাসীর গর্বের ধন মোহাম্মদ আলম। অপেক্ষাকৃত তরুণ শিক্ষক হয়েও সে সময় মোহাম্মদ আলম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
পরবর্তিতে মোহাম্মদ আলম বিসিএস পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে অধ্যাপনা ছেড়ে সরকারী চাকুরীতে যোগ দেন। কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে তিনি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন। রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সফল দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সর্বশেষ সরকারের অতিরিক্ত সচিব থাকাবস্থায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর সদস্য হিসাবে তিনি অবসরে যান। একজন সৎ, দক্ষ ও মেধাবী কর্মকর্তা হিসেবে প্রশাসনের সবার কাছে সুপরিচিত ছিলেন। মোহাম্মদ আলম গুলমেহের পুরুস্কার সহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কারে ভূষিত হন।
চলতি বছরের জানুয়ারীতে তিনি তাঁর সন্তানদের সাথে সময় কাটাতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনীতে যান। কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর শরীরে রক্ত ক্যান্সার ধরা পড়ে। এই রক্ত ক্যান্সারের ভয়াল থাবায় কক্সবাজারের এই কৃতি সন্তানকে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে ২৪ ডিসেম্বর তাঁকে চির বিদায় নিতে হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-