বিজয়ের পঞ্চাশে কী পেয়েছি?

‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন’
স্বাধীনতার অর্ধশত বছরেও আমরা কি স্বাধীনতা রক্ষা করতে পেরেছি, নাকি অন্যজনের চাটুকারিতায় এখনো পরাধীন?

ছোটবেলা থেকে জেনে এসেছি স্বাধীনতা মানে- মুক্ত বা কারো কাছে পরাধীন না থাকা। মানলাম, দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা।

ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য পাকিস্তানী শোষকদের কাছ থেকে মাতৃভূমি রক্ষা করার স্বপ্ন ছাত্র-কৃষক, পেশাদার সকলের ছিল। কিন্তু স্বপ্নডাঙায় চর জাগেনি সর্বত্র।

৪৯ পেরিয়ে ৫০ বছরেও অর্থপূর্ণ স্বাধীনতার স্বাদ পাই নি। আমরা মুক্তির অর্থ বুঝে মুক্তি চেয়েছিলাম, কিন্তু অর্থপূর্ণ মুক্তি পাই নি। কারণ আমরা যাদের চাটুকারিতা করি সেই প্রভুরাই যেভাবে ব্যবহার করে সেভাবে ব্যবহার হচ্ছি।
এই পরাধীনতার শেকড় কোথায়?

চাটুকারিতা না করে কিভাবে স্বাধীন আকাশে মুক্ত পাখির মতো উড়া যায় সেই রহস্যের উন্মোচন করা আবশ্যক।
আজ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশজুড়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধা সম্মানিত হয়েছেন। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত হয়েছেন। সেখানেও খবর নিয়ে দেখুন, ৭১ এ পাক বাহিনীর গুপ্তচর অনেকেই আছে। আমাদের বীরঙ্গনাদের ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করেছে অনেকে আছে। অনেকেই আছে যারা পাকিদের পাখি রান্না করে খাইয়েছিল। তাদের ভিড়ে হারিয়ে গেছে মুক্তির ডাক শুনে ফসলের মাঠ থেকে উঠে এসে লাঙ্গল-জোয়াল ফেলে অস্ত্র হাতে নেয়া আসল মুক্তিযোদ্ধারা। যে মহান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের আত্মদানে পরাধীনতার লৌহকঠিন শৃংখল ভেঙ্গে লাল সবুজের পতাকা উড়েছে এই পলল ভুমিতে। সেই সূর্যসন্তানরা হারিয়ে গেছে চাটুকার তেলবাজ ও মিথ্যা লোকদেখানো চেতনাবাজদের কাছে।

আপনি একটু যাচাই করলে আপনার পাশেই পাবেন অনেক আসল মুক্তিযোদ্ধা এখনো স্বীকৃতি পান নি। থাকেন ভাড়া বাসায় কিংবা বৃদ্ধাশ্রমে। তো এবার বলুন না, আমরা কি এখনো স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করতে পেরেছি? নকল ভুয়া কাগজের সনদের কাছে লেখাপড়া না জানা সূর্যসন্তানরা অচিরেই হারিয়ে যাচ্ছে। শহীদ মিনারে গা ঘেষতে পারেন না ভুয়াদের জন্য। অবহেলিত জীবন নিয়ে কাঁদেন নীরবে। অশ্রুভেজা চোখে তাকিয়ে থাকেন ওই বিশাল আকাশে।

আগে এই সমস্যাার সমাধান হোক, আসল মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই করা হোক তারপর না হয় স্বাধীনতার স্বাদ নেবো নি:শ্বাস ভরে। ঠিক তখনই বলবো- ‘‘বিজয় তুমি বাঙালির অহংকার তুমি সব জনতার,
বিজয় নিশান তুমি স্বাধীন বাংলার স্বাক্ষর’’
আজকের এইদিনে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বাংলার দামাল সন্তানদের। তাঁদের তরে রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা আর অশেষ দোয়া।

লেখক:
তারেকুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার
দৈনিক হিমছড়ি
tarekcox01@gmail.com

আরও খবর