এম ফেরদৌস, উখিয়া •
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য জীবন দেয়া শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) উখিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এ দিবস পালিত হয়।
সূর্যোদয়ের আগে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসটির শুভ সূচনা করা হয়।
উখিয়া উপজেলা প্রশাসন ও সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক অঙ্গ সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণীর পেশজীবিরা প্রথম কর্মসূচি হিসাবে ভোরবেলা সুর্য উদয়ের সাথে সাথে উখিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এরপর সকল শ্রেণীর মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদ মিনার প্রাঙ্গন মাঠে জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুক হক চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন আহমেদ ও এডিশনাল এসপি ( সার্কেল উখিয়া টেকনাফ) মোঃ শাকিল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা , রাজনৈতিক সুশীল সুধীজন ব্যাক্তিবর্গরা।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার বিজয় দিবস উদযাপনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকছে না অন্যান্য বারের মতো আড়ম্বর আয়োজন। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জাতীয় সমৃদ্ধি মহান বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিষয়ে উপজেলা পরিষদ হলরুমে সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১ টা পর্যন্ত অনলাইন ( ভার্চুয়াল) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ এনজিও প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সুধীজন অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন, পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্তির দিন। সারাদেশের মানুষ আজ আনন্দ-উৎসব এবং একই সঙ্গে বেদনা নিয়ে দিবসটি জাতীয় পর্যায়ে সারাদেশে পালিত হচ্ছে। স্বাধীনতার জন্য যে অকুতোভয় বীর সন্তানেরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, গভীর বেদনা ও শ্রদ্ধায় তাদেরকে আজীবন স্মরণ করা হবে।
৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিন বাঙালি জাতি স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে যৌথ বাহিনীর কাছে। এর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার রক্তিম সূর্যালোকে উদ্ভাসিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। সেই থেকে ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যে দিবসটি সাড়ম্বরে উদযাপন করা হয়।
এরপর জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আত্মদানকারী বীর মুক্তিযুদ্ধাদের জন্য মসজিদ,মন্দির,গীর্জা,ক্যাং,প্যাগোডা,ও অন্যান্য উপসানালয়ে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
উল্লেখ্য,বিজয়ের ৪৯ বছর পেরিয়ে এবার ৫০তম বিজয় দিবস আজ। ৪৯ বছর আগে ১৯৭১ সালের এই দিন বিকেলে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) দখলদার পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়েছিল। বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে অভুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের। এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৯ মাসের জনযুদ্ধে ৩০ লাখ প্রাণ ঝরেছে। সারা দেশের মানুষের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিরা আজ বিজয় দিবসে আনন্দে মেতে উঠবে। একই সঙ্গে স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করা অকুতোভয় বীর সন্তানদের গভীর বেদনা ও পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে ।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-