এহসান জুয়েল •
কথা ছিল চুক্তির তিন মাসের মধ্যে শুরু হবে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন। কিন্তু তিন বছর পরও ফলাফল শূন্য। দফায় দফায় সময় ঠিক করা হয়েছে কেবল, ফিরে যায়নি একজন রোহিঙ্গাও। এ জন্য মিয়ানমারের ছলচাতুরিকে এককভাবে দোষ দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, তড়িঘড়ি করে করা চুক্তিটি কার্যকরে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ দেওয়ার জন্য সক্রিয় করতে হবে বাংলাদেশকে।
২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ঢল নামার পর একটা বড় শরণার্থী সমস্যার মুখে পড়ে বিশ্ব। চারদিকে আন্তর্জাতিক চাপ, তৎপর বিশ্ব সংস্থাগুলো। ৩ মাসের মাথায় এমন একটা সময় আশার আলো খুঁজে পায় বাংলাদেশ।
২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাজধানী নাইপিদোতে দু’পক্ষের উপস্থিতিতে হয় চুক্তি। সে চুক্তি অনুযায়ী ৩ মাসের মধ্যে অথাৎ ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়ার কথা প্রথম দফা প্রত্যাবর্তন। এ নিয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হয়েছে তিনটি। যাওয়ার তারিখ ঠিক হয়েছে তিন দফা। মিয়ানমারের হাতে ১ লাখ রোহিঙ্গার তালিকাও তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সবই বিফলে গেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন বলেন, আমরা সব সময় প্রস্তুত। কিন্তু তারা নেয় না। বলে নিবে, কিন্তু কোন ধরনের প্রস্তুতি নেয় না। তাদের একশ বার নক দিলে দুইবার সাড়া দেয়। কথাই বলে না।
শুধু মুখের কথায় কূটনীতিতে চিড়ে ভিজে না। মিয়ানমারকে এ জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক যে চাপ তৈরির কথা সেটা দেয়নি বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো। উল্টো দেশটিতে বিদেশি বিনিয়োগ আরও বেড়েছে।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, দুই দেশের মধ্যে তড়িঘড়ি করে একটা চুক্তি করা হয়। সেটা খুবই দুর্বল। এবং এটা করা ঠিক যে চুক্তিটা হয়েছে এটাতে কোন সেফ গার্ড নেই; যেখানে মিয়ানমার তাদের নিতে বাধ্য।
যতই দিন যেতে থাকবে বৈশ্বিক আলোচনার টেবিলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন ইস্যুটি ততই আরও গুরুত্ব হারানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। যার দীর্ঘমেয়াদি কুফল হয়তো ভোগ করতে হবে বাংলাদেশকেই।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-