উখিয়ায় সরকারি জমিতে বাসা-বাড়ি ও দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দেয়া হচ্ছে

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া •

উখিয়ায় এভাবেই বন বিভাগের জমি দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা।

মানবতার শহর উখিয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় বনখেকো ও ভূমিদস্যুরা। এরই মধ্যে অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছে সংরক্ষিত বনের সরকারি জায়গা। এসব জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে বাসা-বাড়ি, দোকানপাটসহ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। বন বিভাগকে ম্যানেজ ও প্রভাব খাটিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে প্রভাবশালীরা। এসব বাসা-বাড়ি ও ভবন এনজিওদের ভাড়া দেয়া হয়েছে। তাদের দাপটে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের থাকতে হচ্ছে নীরব।এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় মামলা-পাল্টা-মামলা ও হামলার ঘটনাও ঘটেছে।

সরেজমিন উখিয়া রেঞ্জের বন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অবাধে চলছে বন ধ্বংস ও জায়গা দখল। পাশাপাশি প্লট-বাণিজ্য চালাচ্ছে একশ্রেণির দালালচক্র।

উখিয়া রেঞ্জের আওতায় কাগজে-কলমে যে জায়গা থাকার থাকার কথা তার সিকিভাগও নেই বন বিভাগের দখলে। স্থানীয় দুর্বৃত্তরা বনের জমি দখল নিয়ে বিভিন্ন জনের কাছে তা চড়া দামে বিক্রি করছে। শুধু তাই নয়, উখিয়ার বনবিট এলাকাকে অনেক দিন আগেই সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘোষণা করা হলেও বাস্তবে এ জায়গা বন বিভাগের হাতে নেই।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সামাজিক বনায়নে প্রকৃত হতদরিদ্ররা প্লট না পেলেও স্থানীয় প্রভাবশালীরা তাদের পরিবারের-সদস্যদের নামে-বেনামে বরাদ্দ নিয়েছে। মালিকানা নিয়ে কোনো জটিলতা নেই, তারপরও বন বিভাগের জমি অবৈধ দখলে। কর্তা ব্যক্তিদের গাফেলতির কারণে সেসব জমি উদ্ধার করা হচ্ছে না। লোভ লালসার কবলে পড়ে তলানীতে ঠেকেছে কতিপয় লোভী মানুষের বিবেকবোধ। এরই ধারাবাহিকতায় ভূমিদস্যুতার খেলায় মেতে উঠেছে মানুষ নামীয় এক প্রকার হীনমন্য প্রাণী। সমতল ভিটেভূমি বন বিভাগের জমি দখল করার পর খাওয়া শুরু করেছে পাহাড় ধ্বংস করেছে প্রকৃতির প্রায় সকল ঐতিহ্য ও মানুষের বেঁচে থাকার পরিবেশ। আর এই দখল বাণিজ্যের বলির শিকার হয়ে বিলীন হতে বসেছে উখিয়ার ঐতিহ্যবাহী খালগুলো। উখিয়ার মানচিত্রে খাল-বিল নদী নালার যে অবস্থান ছিল তা এখন দখলে বিলীন হয়ে প্রায় অস্থিত্ব সংকটে বিদ্যমান। পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, রাস্তার গোপাট, খাল-বিল, নদী-নালা ও সরকারি দখলীয় জায়গা উদ্ধার করে উখিয়াকে একটি পরিচ্ছন্ন, বাসযোগ্য সুন্দর পরিবেশ এবং সেই আগের মতো নির্মল বাতাস ফিরিয়ে পেতে সংশ্লিষ্টদের আরো আন্তরিক হয়ে দেশ প্রেম ও দশের কল্যাণে কাজ করার আহবান জানান।

সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের দায়িত্বশীল একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্ষেত্র-বিশেষে এরা অনেক সময় অসহায় হয়ে পড়েন। জনবল সংকটের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় তারা আমাদের রোহিঙ্গার উদাহরণ দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গারা বন বিভাগের জায়গায় থাকতে পারলে আমরা কেন পারবো না? তাই উচ্ছেদ করতে গেলে ঝামেলায় পড়তে হয়।

আরও খবর