টেকনাফে পুরুষদের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নারী মাদক কারবারির সংখ্যা: জড়িত রোহিঙ্গারা

গিয়াস উদ্দিন ভুলু, কক্সবাজার জার্নাল •


সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় পুনরায় বৃদ্ধি পাচ্ছে মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে ইয়াবার আগ্রাসন।

এদিকে মাদকের এই করাল গ্রাস প্রতিরোধ করার জন্য টেকনাফে কর্মরত আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা কঠোর অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

তথ্য অনুসন্ধানে আরো দেখা যায়, পুরুষ মাদক কারবারীদের সাথে পাল্লাদিয়ে বেড়েই চলছে নারী মাদক ব্যবসায়ীদের সংখ্যা।

তবে মাদক ব্যবসায় জড়িত বেশীর ভাগ নারী হচ্ছে, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা টেকনাফে বসবাসরত রোহিঙ্গা নর-নারী। আর এই অর্থলোভী নারী মাদক পাচারকারীদের ব্যবহার করে স্বল্প সময়ের মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে বৈধ ব্যবসার আড়ালে লুকিয়ে থাকা মাদক কারবারীরা।

ইদানিং টেকনাফ উপজেলার প্রতিটি গ্রামে কম-বেশী প্রাপ্ত বয়স্ক মাদক চোরাকারবারী রয়েছে। মাদক কারবারে জড়িত চোরাকারবারীদের সার্বিক সহযোগীতা করে যাচ্ছে তাদের স্ত্রীরা। মাদক বহনে জড়িত নারীরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আইন-শৃংখলা বাহিনীর চোঁখকে খুব সহজে ফাঁকি দিতে সক্ষম হয়। বেকারত্ব আর অভাবের তাড়নায় জিবনের ঝুঁকি নিয়ে মাদকের চালান বহন করতে গিয়ে অনেক নারী,ঢাকা,কুমিল্লা,ফেনী, চট্টগ্রাম,কক্সবাজার, টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংশ্লিষ্ট এলাকায় দায়িত্বরত আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে কারাভোগ করছে।

চলমান মাদক বিরোধী অভিযানকে আরো জোরদার করার জন্য নাম প্রকাশে অনিশ্চুক সচেতন সমাজের বেশ কয়েকজন ব্যাক্তি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন,
টেকনাফে বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় হয়ে থাকা মাদক ব্যবসায়ীরা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা,জনপ্রতিনিধিদের ছত্রছায়ায় ইদানিং শিশু-কিশোর ও নারী মাদক পাচারকারীরা তাদের অপকর্ম অব্যাহত রাখতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

প্রতিনিয়ত বাড়ছে মাদক পাচারকারীর সংখ্যা।
তাদের অভিমত আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা চলমান মাদক বিরোধী অভিযানকে আরো জোরদার না করলে মাদক ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা এই পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকারে রুপান্তরিত হবে।

অত্র উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়ন থেকে শুরু করে উপকুলীয় ইউনিয়ন বাহারছড়া, সাবরাং,শাহপরদ্বীপ এবং নাফনদীর উপকুলভর্তী প্রায় ১৪৩টি পাড়া মহল্লায় বয়স্ক-প্রাপ্ত বয়স্ক নর-নারীরা মাদক পাচারে লিপ্ত হওয়ার কারনে মাদকের পাচার আগ্রাসন বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাদের আনা-ঘোনা এখন চোখে পড়ার মতো।

এদিকে সারা দেশের ন্যায় করোনাভাইরাস কারনে গত ৭/৮ মাস ধরে অত্র উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থলোভী পরিবারের অনেক শিক্ষার্থী মাদক সংশ্লিষ্ট বন্ধুদের সংস্পর্শে মিশতে গিয়ে টাকার লোভে অনেক শিক্ষার্থী মাদক ব্যবসায় লিপ্ত হচ্ছে।

টেকনাফে গড়ে উঠা বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা শিবির থেকে তথ্য নিয়ে জানাযায়, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাদকের চালান নিয়ে আটক প্রায় এক শতাধিক রোহিঙ্গা নারী কারাগারে রয়েছে। পুরুষ মাদক কারবারীর পাশাপাশি নারী মাদক পাচারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ার কারন জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি (তদন্ত) আব্দুল আলিম জানান, অত্র উপজেলা থেকে মাদক পাচার প্রতিরোধে পুলিশের ভুমিকা প্রশংসনীয় তবে এই অভিযানে আরো বেশী সফলতা পাওয়ার জন্য মাদক বিরোধী চলমান অভিযানকে আরো জোরদার করা হবে। মাদক পাচারে জড়িত সে যেই হোক কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায় জড়িত অপরাধীদের আইনের আওয়তাই নিয়ে আসা হবে।
এব্যাপারে টেকনাফ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে কর্মরত সহকারী পরিচালক দেওয়ান মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা বিভিন্ন তথ্য অনুসন্ধানে জানতে পারি ইদানিং মাদক কারবার জড়িত অপরাধীরা বিভিন্ন কৌশলে ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গা নারী,ও স্থানীয় গরীব-দুঃখি অসহায় নারীদের বেশী টাকার লোভ দেখিয়ে মাদক বহনে ব্যবহার করছে।

তিনি আরো বলেন,গত দুই মাসের মধ্য আমরা ৮/১০জন মহিলা মাদক ব্যবসায়ীকে ইয়াবাসহ আটক করতে সক্ষম হয়েছি।

স্থানীয় সচেতন সমাজের ব্যাক্তিরা তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করলে মাদক পাচার প্রতিরোধে আমরা আরো বেশী সফলতা অর্জন করতে পারবো।

আরও খবর