নিজস্ব প্রতিবেদক •
বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এমন কোনো দেশ নেই। বাংলাদেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লেও সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের কারণে জনসংখ্যা অনুপাতে তা ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারেনি বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল। তথাপিও কোমলমতি শিশুরা স্কুল বন্ধ পেয়ে বিভিন্ন শিশু শ্রমের দিকে ধাবিত হওয়ায় এসব শিশুদের পুনরায় শিক্ষাঙ্গনে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
সম্প্রতি উখিয়ার কোর্টবাজার স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, যানবাহন গ্যারেজে কোমলমতি শিশুরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে। এমন একজন শিশু ফোরকান। বয়স ৯/১০ বছর। পরনে হাফ প্যান্ট, গায়ে গেঞ্জি। জানতে চাওয়া হলে বলে স্কুল বন্ধ তাই গ্যারেজের কাজ করছি। এখানে দৈনিক ৫০ টাকা বেতন দেয়। তা দিয়ে বাড়ি খরচ না চললেও বাবা-মায়ের অনেক কাজে আসছে বলে ঐ শিশু দাবি করে। স্কুল খুললে যাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সে জানায়, এখানে বেতন বাড়িয়ে দিলে আর স্কুলে যাব না।
উখিয়া সদর, কুতুপালং, বালুখালী, পালংখালী, থাইংখালী, মরিচ্যা, সোনারপাড়া ও কোর্টবাজার ঘুরে দেখা যায়, হোটেল রেস্টুরেন্টে অসংখ্য শিশু শ্রমিক কাজ করছে। তাদের বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। স্কুল বন্ধ থাকায় হোটেল রেস্টুরেন্টে কাজ করে টাকা আয়ের জন্য মা-বাবার অনুমতি রয়েছে। স্কুল খুললে আবার ফিরে যাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ঐ শিশুরা বললেন, স্কুল খুললে চলে যাব। এ সময় বেশকিছু অভিভাবকদের সঙ্গে আলাপ হলে তারা জানান, ছেলে বেকার থাকলে খারাপ হয়ে যাবে। তাই কাজে লাগিয়ে দিয়েছি। সকালে যায়, বিকেলে বাড়িতে ফিরে আসে। অবস্থা স্বাভাবিক হলে এসব শিশুদের স্কুলে পাঠানো হবে কি না, জানতে চাইলে অভিভাবক ইসলাম মিয়া জানান, অবশ্যই স্কুল খুললে তার ছেলেকে শিক্ষাঙ্গনে পাঠানো হবে।
এ প্রসঙ্গে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক তৌহিদুল আলম তহিদের বলেন, উচ্চ শিক্ষাঙ্গনে যেসব শিক্ষার্থী রয়েছে তাদেরকে তারা কোনোভাবে ম্যানেজ করে নিতে পারবে। তবে শিশু শিক্ষার্থীদের বেলায় মারাত্মক হয়রানির শিকার হতে হবে অভিভাবক তথা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। কেননা যেসব শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন স্কুলে অনুপস্থিত তাদেরকে শিক্ষাঙ্গনে ফিরান কষ্টকর হবে।
উখিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ জানান, তার স্কুলে যেসব শিক্ষার্থী রয়েছে তারা স্কুল খোলা মাত্রই চলে আসবে। তবে কিছু কিছু গরিব শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকতে পারে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-