চালের চেয়ে আলুর দাম বেশি

কক্সবাজারে সবজির বাজারে আগুন: ভরসা ডাল

সাইফুল ইসলাম, কক্সবাজার জার্নাল •


কক্সবাজার শহরের সবজির বাজারে আগুন। ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজিই পাওয়া যাচ্ছেনা। বাজারে পযার্প্ত সবজির দেখা মিললেও বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে দাম কমাচ্ছে না বলে দাবি ক্রেতাদের। কিন্তিু বিক্রেতারা বলেন, আড়ৎ থেকে বেমি দামে সবিজর ক্রয় করে স্বল্প দামে কিভাবে বিক্রি করবো। উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা বেড়ে যাওয়াতে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তরা চরম কষ্টের মধ্যে পড়েছে।

একদিকে সাগরে ২২দিন বোট যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার, অন্যদিকে সবজির দামও অতিরিক্ত ধরে বিক্রি করলে সাধারণ মানুষের এখন ভরসা শুধুই ডাল। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায়ই সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।

সচেতন মহলের দাবি, বাজারে প্রশাসনের নজরদারী অবশ্যই প্রয়োজন। নয়তো দাম এভাবে বাড়তে থাকলে মানুষকে না খেয়ে থাকতে হবে।
১৬ অক্টোবর (শুক্রবার) শহরের কানাইবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, চালের চেয়ে আলুর দাম বেশি। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে আলুর দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি করছে। এছাড়াও প্রতিটি সবজির দাম চড়া। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আলু, টমেটো ও কাঁচা মরিচের দাম। ২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচের কেজি। প্রতি কেজি টমেটোর বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। আর ললিতা আলু বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, দেশি আলু ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, তিতকরলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এছাড়াও বেগুন, বরবটি, কাঁকরোল, করলা, মুলা, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গাসহ বেশিরভাগ সবজি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁযাজের দাম আরো বাড়া কেজিতে বড় বাজার ৯০ টাকা বিক্রি হলেও সেই পেঁয়াজ ১০০ টাকা ১১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে প্রতিনিয়তেই প্রশাসন কর্তৃক নির্দেশনা দেওয়ার পরেও কক্সবাজার শহরের কাঁচাবাজার ও দোকানে এখনো টাঙ্গানো নেই পণ্যের সঠিক দাম দ্রব্যমূল্যের তালিকা। সম্প্রতি বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম চড়া ধরে বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। এদিকে বিক্রেতা বলেন, পাইকারী বাজারে পণ্যের দাম অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও পণ্য চড়া দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

এছাড়াও উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় একটু বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে দ্রব্য মূল্যের তালিকা টাঙ্গানো না থাকায় একেক দোকানে একেক দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন পন্য। কিন্তু বড় বাজারের কাঁচাবাজারসহ কয়েকটি দোকানে দ্রব্য মূল্যের তালিকা টাঙ্গানো হলেও ওই মূল্যের সাথে বিক্রির পার্থক্য রয়েছে। সম্প্রতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো জরুরী হয়ে পড়ে বলে দাবি করছেন সচেতন মহল। এছাড়াও কয়েকটি বাজারে দ্রব্য মূল্যের তালিকায় কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন পণ্যের নাম লেখা থাকলেও টাকার অংশটি খালি রয়েছে। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছে মানুষ।

জানা যায়, বাজার মালিক সমিতি, খুচরা এবং পাইকারি বিক্রেতাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দ্রব্যমূল্যে তালিকা রাখতে প্রশাসনের পক্ষে থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি কাঁচাবাজার ও দোকানে মূল্য তালিকা টাঙ্গিয়ে দিতে ও ডিজিটাল ওজন পরিমাপক মেশিন স্থাপন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ নানা বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।

বৃহত্তর রুমালিয়ার পিটিস্কুল বাজারে সবজি ক্রয় করতে কলিম উল্লাহ নামে এক রিক্সা চালক বলেন, আমি রিক্সা চালিয়ে সংসার চালায়। সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত রিক্সা চালিয়ে আয় হতো ৫’শ টাকা আয় হয়। ততমধ্যে থেকে ১২০ টাকা রিক্সা বাড়া চলে গেলে বাকী থাকতো ৩৮০ টাকা। তা নিয়ে বাজারে গেলে মাছ কিনলেও তরকারী কিনার টাকা থাকে না। সম্প্রতি বাজার সবজির দাম চড়া। যদিও আগের চেয়ে বেশি দাম বেড়ে যায় না খেয়ে থাকতে হবে। এ জন্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রশাসনের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. ইমরান হোসাইন বলেন, শুনেছি বাজারে প্রতিটি দ্রব্যমূল্য বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। যেকোন মুহুর্তে বাজারে অভিযান চালানো হবে। যদিও অতিরিক্ত দাম ও দ্রব্যমূল্যের তালিকা টাঙ্গানো না থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জনস্বার্থে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজার কাযার্লয়ের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আরও খবর