কক্সবাজারে চাঞ্চল্যকর দুই ধর্ষণ মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন

বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজারে ধর্ষণ মামলা দায়েরের দীর্ঘদিন পর চাঞ্চল্যকর দুই মামলায় দুই ধর্ষকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে মামলা দায়েরের ১৬ বছর পর জালাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন মন ট্রাইব্যুনাল-১। একই সাথে তাকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। কারাদন্ডপ্রাপ্ত জালাল উদ্দিন চকরিয়া পৌর এলাকার আহমদ হোসেনের ছেলে। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।

অপরদিকে ২০০১ সালে দায়ের হওয়া অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় ১৯ বছর ছয় মাস পর নুরুল হুদা নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন মন ট্রাইব্যুনাল-১। একই সঙ্গে আসামির ৫০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদন্ডাদেশ দেন আদালত। যাবজ্জীবন দন্ড পাওয়া নুরুল হুা কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলাপুর ইউনিয়নের মধ্যম নাপিতখালীর ছিদ্দিক আহমদের ছেলে।

বুধবার (১৪ অক্টোবর) ও মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন মন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোসলেহ উদ্দীন চাঞ্চল্যকর এই দুই ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন মন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর বউিল আলম সিকদার।

স্পেশাল পিপি বদিউল আলম সিকদার জানান, আসামী জালাল উদ্দিন মামলার বাদীকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়ে ধর্ষন করে। পরবর্তীতে অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়লে তাকে আর বিয়ে করেনি। তার একটি পুত্র সন্তানও জন্মগ্রহন করে। সেই পুত্র সন্তানের বয়সও বর্তমানে ১৫ বছর। আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়া এ রায় দিয়েছেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ফরিয়াদি ওই নারী মামলার রায় পেয়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট।

সম্প্রতি ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন’ সংশোধনী অধ্যাশে জারির দুই দিনের মধ্যে এই যুগান্তকারী রায় এলো কক্সবাজারে।

অপর মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণের পর ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন মন ট্রাইব্যুনাল-১ এ নুরুল হুাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। আালতের নির্দেশ পেয়ে একই বছরের ২৫ এপ্রিল অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করে কক্সবাজার সদর মডেল থানা। এসআই সোলাইমান চৌধুরী মামলাটি তদন্ত করে ২০০১ সালের ১৭ জুলাই আদালতে চার্জশিট দেন। আদালত সেটি আমলে নিয়ে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন।

মঙ্গলবার বিকেলে দেওয়া রায়ে প্রধান আসামি নুরুল হুদাকে (৪২) যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন মন ট্রাইব্যুনাল আালত-১। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। অন্যদিকে অপর সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

আরও খবর