এ বছর বিশ্বে উৎপাদিত মোট ইলিশের ৮০ ভাগের বেশি বাংলাদেশে উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। সোমবার সচিবালয়ে ‘মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২০’ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই ইলিশ এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছবে যেন সব মানুষ ইলিশ খেতে পারে। ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত ইলিশ উৎপাদন হওয়ার পর বাণিজ্যিকভাবে রফতানির চিন্তা করা হবে। এই মুহূর্তে বাণিজ্যিকভাবে ইলিশ রফতানির কথা ভাবছি না। আশা করি, ভবিষ্যতে ইলিশের উৎপাদন এমন জায়গায় পৌঁছাবে যেদিন ইলিশ রফতানি করে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবো।
মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম
মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম
তিনি বলেন, এ বছর ইলিশের আকার ও স্বাদ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক ভালো। ইলিশ একটা সময় দুষ্প্রাপ্য হয়ে যাচ্ছিল, সেই ইলিশ এখন সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছে যাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন বিভিন্ন দফতর-সংস্থা, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, মাঠ প্রশাসন সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
মন্ত্রী জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে বুধবার (১৪ অক্টোবর) থেকে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা, বিক্রি, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ থাকবে। এসময় কোনোভাবেই দেশের জলসীমায় ইলিশ আহরণের অবৈধ প্রচেষ্টা সফল হতে দেয়া হবে না।
উৎপাদন বাড়াতে ২২ দিন ইলিশ ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মা-ইলিশ রক্ষায় ইলিশের বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনায় নিয়ে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে ভিত্তি ধরে মৎস্য সংরক্ষণ আইন সংশোধন করে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময়সীমা ২২ দিন করা হয়েছে। মা-ইলিশ থাকতে পারে এমন নদীতে কাউকে মাছ ধরতে দেয়া হবে না।
নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডের টহলের পাশাপাশি অত্যাধুনিক উপায়ে মনিটর করা হবে জানিয়ে রেজাউল করিম বলেন, এমনকি বিদেশ থেকে কোনো মাছ ধরার যান্ত্রিক নৌযান এলে সেটাকেও আইনানুগ প্রক্রিয়ায় আটক করা হবে।
সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এ বছর ইলিশ উৎপাদন হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। ১৪ অক্টোবর থেকে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মা-ইলিশ ধরা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য অধিদফতর সম্মিলিতভাবে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, ৩৬ জেলার ১৫২ উপজেলায় আমাদের কর্মসূচি থাকবে। যারা ইলিশ আহরণ বা বিক্রয় করতে পারবেন না, তাদের আমরা পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি। যেন মৎস্যজীবী, মৎস্য আহরণকারী বা এ প্রক্রিয়ায় জড়িত একজন মানুষও খাবারের সংকটে না থাকে। এ বছর আমরা সশরীরে নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডসহ অন্যদের সঙ্গে মাঠে থাকব, যেন ইলিশ উৎপাদনের সাফল্য কোনোভাবে ব্যাহত না হয়। ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বরফকল খুলতে দেয়া হবে না।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-