ফারুক আহমদ , উখিয়া •
উখিয়া উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নের পশ্চিম পাইন্যাশিয়া জুম্মাপাড়া গ্রামে যৌতুকলোভী পাষণ্ড স্বামীর নির্দয় নির্যাতনে জোসনা বেগম (২০) নামক এক সন্তানের জননী হত্যার ঘটনা ধামা চাপা দিতে দেনদরবার শুরু করেছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার অন লাইন নিউজ পোর্টালে উখিয়ায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়।
নিহতের বয়োবৃদ্ধ পিতা আবদুস ছালাম (৬৫) সাংবাদিককে বলেন, লাশের ময়না তদন্তের কথা বলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে উখিয়া থানার পুলিশ। আমি অশিক্ষিত মানুষ। পুলিশ সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে বললে আমি সরল বিশ্বাসে স্বাক্ষর করি।
তিনি আরো বলেন, গত সোমবার ময়নাতদন্ত শেষ করে আমার নিহত মেয়ে জোসনার দাফন শেষ করি। ৫ অক্টোবর মঙ্গলবার মেয়ের হত্যার বিচার চেয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ বলেন এ ব্যয়পারে অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। তখন মেয়ের হত্যার বিচার চাইতে আসা বয়োবৃদ্ধ পিতা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
জানা যায়, গত ২০১৯ সালের মে মাসে উখিয়া উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নের পশ্চিম পাইন্যাশিয়া জুম্মা পাড়া গ্রামের আবদুর রশিদের পুত্র আবদুল আজিজের সাথে রামু উপজেলার খুনিয়া পালং ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালিয়া গ্রামের আব্দুস সালামের কন্যা জোসনা বেগমের মধ্যে বিবাহ হয়। তাদের সংসারে ৬ মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
অভিযোগে প্রকাশ বিবাহের পর থেকে যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করে আসছিল স্ত্রী জোসনাকে। গত রবিনার যৌতুকের দাবিতে পাষণ্ড স্বামী অমানুষিক নির্যাতন করে স্ত্রীকে।
স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের নির্দয় নির্যাতনের আঘাতে স্ত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে উখিয়া হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার গৃহবধূ জোসনাকে বেগম কে মৃত্যু ঘোষণা করে।
জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরি সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
এদিকে খুনিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মাবুদ জানান, যৌতুকের দাবিতে পাষণ্ড স্বামী আব্দুল আজিজ সহ অন্যান্যরা অমানবিক শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে জোসনাকে কে খুন করা হয়।
তবে এ ধরনের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন খুনিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ। নিহতের বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন জানান আমার বোনকে যৌতুকের দাবিতে স্বামী আব্দুল আজিজ, শাশুড়ি ও খালা আয়েশা সহ মীর কাসেম ও মিজান পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যার অপপ্রচার চালায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে নিহত গৃহবধূর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি কালে লাশের শরীরে প্রচন্ড মারধরের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
থানার ডিউটি অফিসার বলেছেন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক হত্যাকারীদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য বয়োবৃদ্ধ পিতা পুলিশ প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-