দীপন বিশ্বাস, কক্সবাজার •
সারাদেশে সরকার পরিবেশ রক্ষায় পলিথিন বিক্রি নিষিদ্ধ করলেও একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে তা বন্ধ হচ্ছে না।
সিন্ডিকেট করে এসব ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে কক্সবাজার জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় তাদের ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে। মাঝে মধ্যে ধর-পাকড়ে প্রশাসন মাঠে নামলে এসব ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন নানা স্থানে দ্রুত সড়িয়ে ফেলে। যার কারণে পলিথিনের বড় কোন চালান এখনও আটক হয়নি।
তবে মাঠ পর্যায়ে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে প্রশাসন বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করে এসব পলিথিন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জরিমানা আদায় করতে দেখা গেছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য বলে মনে করছেন কক্সবাজার জেলায় পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন একাধিক সংগঠনের সাথে জড়িত নেতারা।
সূত্র জানায়, জেলার সীমান্ত জনপদ টেকনাফ পুরাতন বাস স্টেশন এলাকায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন বিক্রির অভিযোগে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানাসহ সাড়ে ১৩ শত কেজি পলিথিন জব্দ করেছে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তর।
টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মুহাম্মদ আবুল মনসুর ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোঃ মইনুল হক এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন। জারিমানাকৃতরা ব্যবসায়ীরা হল- টেকনাফ পুরাতন বাস স্টেশন এলাকার হৃদয় ৫ হাজার, মৌলভী মোঃ ফারুক ১০ হাজার, উত্তম পাল ৫ হাজার, আবুল কাশেম ১০ হাজার ও মন্টু দাশ ৫ হাজার টাকা। এসময় ৫ টি দোকান থেকে প্রায় সাড়ে ১৩ শত কেজি নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগ জব্দ করা হয়।
কক্সবাজারে পরিবেশ নিয়ে কাজ করে ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহি ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, পরিবেশের চরম ক্ষতিকর এই নিষিদ্ধ পলিথিন কক্সবাজারে অবাধে ব্যবহার হচ্ছে। বিশেষ করে কক্সবাজার পৌর শহরের বড় বাজার, বাহারছড়া বাজার, কানাইয়ার বাজার, সমিতিপাড়া বাজার, রুমালিরছড়া বাজার, কালুর দোকানসহ বিভিন্ন হাট বাজারে এসব পলিথিন ব্যবহার করছে ব্যবসায়ীরা। প্রশাসন আন্তরিক হলে এসব পলিথিনের ব্যবহার দিনে দিনেই বন্ধ করা সম্ভব। তবে খুচরা বাজারে বন্ধ করলে হবে না। করতে হবে পাইকারি বাজারে। যেসব স্থান থেকে এসব নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রয়ের জন্য নিয়ে আসে ব্যবসায়ীরা আগে তাদের চিহ্নিত করে অভিযানে নামতে হবে। এছাড়া উৎপাদনের স্থান চিহ্নিত করে চালাতে হবে অভিযান। তবেই ধীরে ধীরে পলিথিনের ব্যবহার কমে আসতে শুরু করবে। বাড়াতে হবে সচেতনতা।
এছাড়াও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা জেলার নানান সংগঠনের একাধিক নেতারা জানিয়েছেন, পলিথিন নিষিদ্ধে অভিযান প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগন্য। ঘন ঘন প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলে পলিথিনের ব্যবহার কমে যাবে।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শেখ মোঃ নাজমুল হুদা বলেন, আমরা পরিবেশ রক্ষায় নিয়মিত নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি। আমাদের দেখলে বা অভিযানের খবর পেলে অসাধু ব্যবসায়ীরা পলিথিন দ্রুত সড়িয়ে ফেলে।
তারপরও আমারা সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি, পলিথিনের ব্যবহার যেন বন্ধ হয়।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-