অনলাইন ডেস্ক • যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী এক বাংলাদেশি দম্পতির গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে তাদের বাসায়; স্ত্রীকে গুলি করে হত্যার পর স্বামী নিজেও আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
রবিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টার দিকে এরিজোনার লভেন শহরে এই ঘটনা ঘটে।
আবুল আহসান হাবিব (৫২) ও তার স্ত্রী সৈয়দা সোহেলী আকতার চায়না (৪৩) দুজনের বাড়ি বাংলাদেশের মাগুরা শহরে। ২০০৮ সালে পারিবারিক ভিসায় দুই ছেলেসহ যুক্তরাষ্ট্রে এসে এরিজোনায় থাকতে শুরু করেন।
আবুল আহসান হাবিব নামের ওই ব্যক্তির সঙ্গে তার স্ত্রী সৈয়দ সোহেলি আক্তারের দীর্ঘদিন সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। একটি পার্লার চালানো সোহেলি গত কয়েক বছরে আর্থিকভাবে বেশ স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেন। আহসান কাজ করতেন দোকানে।
লভেনের বাংলাদেশি কমিউনিটির একাধিক প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্ত্রীকে নিয়ে আহসান সারাক্ষণ অভিযোগ করতেন। দুই ছেলের দিকে খেয়াল রাখতেন না। কিন্তু স্ত্রী এই অভিযোগকে কখনোই পাত্তা দেননি।
ফিনিক্স পুলিশ জানিয়েছে, ওই দম্পতির মৃত্যুর ঘটনা তারা তদন্ত করে দেখছে। তবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলছেন, মহামারীর সঙ্কটে বেকারত্বের গ্লানি আর দাম্পত্য কলহই ওই দম্পতির করুণ পরিণতি ডেকে এনেছে।
ফিনিক্স সিটির বাসিন্দা ফোবানার প্রধান নির্বাচন কমিশনার মাহবুব রেজা রহিম জানান, হাবিব একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন। আর চায়না একটি বিউটি পারলার চালাতেন। কিন্তু মহামারীর মধ্যে দুজনেই কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বাংলাদেশি নারী এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আহসান এক সপ্তাহ আগে তার ক্যানসারের কথা জানতে পারেন। কিন্তু পরিবারের কাছে গোপন রাখেন।
রবিবার রাতে স্ত্রীর সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। দুজনে মারামারিও করেন। পরে স্ত্রী পুলিশকে ফোন করে বিষয়টি জানান।
পুলিশ আসার আগ মুহূর্তে আহসান বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পুলিশ সদস্যরা ৪২ বছর বয়সী সোহেলি এবং তার বড় ছেলেকে কিছু পরামর্শ দিয়ে বিদায় নেন।
আহসান ওই সময় পাশে লুকিয়ে ছিলেন। পুলিশকে চলে যেতে দেখে ঘরে ঢোকেন। সোহেলি আবার জরুরি নম্বরে ফোন করে স্বামীর আসার খবর জানান।
এরিজোনার সবচেয়ে বড় ডমেস্টিক ভায়োলেন্স সেন্টারের সিইও মরিয়াহ মাহুন জানিয়েছেন, পুলিশ সদস্যরা ফোনে কথা বলার সময় গুলির শব্দ পেয়ে দ্রুত রওনা দেন। ঘটনাস্থলে এসে দুজনকেই মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তারা।
পুলিশের ধারণা, আহসান স্ত্রীকে গুলি করে নিজে আত্মহত্যা করেছেন।
বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা বলছেন আহসান সপ্তাহ খানেক আগে বন্দুকটি কিনেছিলেন। কিন্তু এতদিন সেটি লুকিয়ে রাখেন।
ফিনিক্স পুলিশের মুখপাত্র সার্জেন্ট টমি থমসন বলেন, পুলিশ অপারেটর যখন চায়নার সাথে কথা বলছিলেন, তখনই তিনি দুটি গুলির শব্দ পান। পুলিশ দ্রুত সেখানে গিয়েও মৃত্যু ঠেকাতে পারেনি।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তলটি হাবিবের লাশের পাশেই পড়ে ছিল। পুলিশের ধারণা, হাসিব বাসার বাইরে যাওয়ার পরপরই হাবিব বাসায় ফেরেন এবং চায়নাকে গুলি করে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-