“কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী বদর মোকাম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিত, মানহানিকর সংবাদ সম্পর্কে মসজিদ কমিটির প্রতিবাদ বিবৃতি”…
গত ২৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে ভয়েস ওয়ার্ল্ড২৪.কম নামক অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত “বদর মোকামের দানবাক্সের টাকায় হান্নানের রাজকীয় জীবন”শীর্ষক সংবাদটি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যা সম্পূর্ণ রুপে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অবাস্তব ও মানহানিকর। আমরা এহেন ভূয়া ও বিভ্রান্তিকর সংবাদের জোর প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
সংবাদে আবদুল হান্নান সাউদকে ভবঘুরে উল্লেখ করা হয়েছে। যা চরম আপত্তিকর। আবদুল হান্নান সাউদ কক্সবাজারের একটি ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। ছোটকাল থেকেই হান্নান সাউদ একজন সৌখিন ও উন্নত রুচিবোধ সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। যারা তাকে বেকার ও ভবঘুরে বলে তার আয়ের উৎস নিয়ে কথা বলছেন, তাদের জানা উচিত, তিনি মসজিদ কমিটির দায়িত্ব নেওয়ার আগেই সৌদি আরব, ব্যাংকক, ইন্ডিয়া ভ্রমণ করেছেন।
২০০৭ সালে লালদিঘীতে সুইপ্ট টেক নামে কম্পিউটার দোকান, ইডেন গার্ডেন এ অঙ্গনা বোটিকস্ ও অঙ্গনা কিডস কর্ণার, একই নামে কোরাল লীফে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। তিনি কক্সবাজার-টেকনাফ রোডে স্পেশাল সার্ভিস গাড়ীর(চট্ট মেট্রো ১১-০-১২৬) মালিক ছিলেন। বদরমোকামে তাদের পৈত্রিক জমির উপর ১৫ টি দোকান রয়েছে।
তিনি প্রাাইভেট কার গাড়ী, ডায়াং মটর সাইকেল, বাজাস কেলিভার, বেনলি হোন্ডা ব্যবহার করেছেন। এমনকি তার মরহুম পিতাও ইতিলিয়ান বেসপা গাড়ী ব্যবহার করতেন। এছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের সুপ্রতিষ্ঠিত, ঐতিহ্যবাহী ও সম্মানিত পরিবর্গের সাথে হান্নান সাউদ পরিবারের আত্নীয়তার সম্পর্ক। রাজকীয় চালচলন তার রক্তে রয়েছে। রাজকীয় চালচলন ও অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হান্নান সাউদ এর আয়ের উৎস নিয়ে কথা বলা চরম অজ্ঞতা ও হাস্যকর।
আবদুল হান্নান সাউদ মসজিদের টাকা তছরুপ করছেন বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাও মনগড়া ও চরম আপত্তিকর।
মূলত হান্নান সাউদ ২০১৬ সালে বদর মোকাম মসজিদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হান্নান সাউদের নেতৃত্বে মসজিদ কমিটির আন্তরিক প্রচেষ্টায় মসজিদের পূর্বে মসজিদের দৃশ্য ও পরের নজরকাড়া কারুকাজ দেখলে সচেতন মানুষ মাত্রই বুঝতে পারবেন, তাদের নেতৃত্বাধীন বদর মোকাম মসজিদ কমিটি মসজিদের অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। মসজিদের দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ শুধু কক্সবাজারে নয়, দেশ বিদেশেও ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
শুধু তাই নয়, বদরমোকাম জামে মসজিদকে কমপ্লেক্সে রুপান্তর করা হয়েছে।
এই মসজিদ কমিটি প্রতিনিয়ত জেলার অনাচে কানাচে অনুন্নত অনেক মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, হেফজখানায় আর্থিক অনুদান দিতে সহযোগিতা করছেন। মসজিদের কর্মপরিধি বাড়ানোর জন্য তুলাবাগানের কেচুবনিয়ায় মসজিদের নামে ৪ কানি সম্পত্তি ক্রয় করা হয়েছে। সেখানে বদরমোকাম মসজিদের আদলে একটি উন্নত মসজিদ ও হেফজখানা করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। বর্তমানে ওই জমিতে উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বদরমোকাম মসজিদ প্রতিষ্ঠার আড়াইশো বছরের ইতিহাসে মসজিদের জন্য জমি ক্রয় করে মসজিদ প্রতিষ্ঠার করার জন্য উন্নয়ন কাজ চালানোর অনন্য রেকর্ড এই মসজিদ কমিটিই সৃষ্টি করেছেন।
এছাড়া প্রতিসপ্তাহে দানবাক্সে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা আয়, জেলা ব্যাপী ৭০/৮০ টি দানবাক্স থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আয় ও লুটপাট করার তথ্য সম্পূন্নরুপে বানানো ও সাজানো গল্প। এই বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, বদর মোকাম মসজিদের দৈনন্দিন আয়-ব্যয়ের হিসেবে অত্যন্ত স্বচ্ছ ভাবে আমাদের হিসাব বহিতে লিপিবদ্ধ করা আছে।
মসজিদ কমিটির মাধ্যমে বদরমোকাম জামে মসজিদের আয় ব্যয়ের হিসাব নিয়মিত আপডেট রাখা হয়। এখানে টাকা নয়ছয় করার কোন সুযোগ নেই। এছাড়াও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি চেকে সই করেন না, তার অগোচরে বা অজ্ঞাতসারে মসজিদ পরিচালনা কার্যক্রম চলছে দাবী করে আমাদের সম্মানিত সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী মসজিদের কার্যক্রম সম্পর্কে কিছুই জানে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যা মিথ্যাচার, অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই নয়। মসজিদের প্রতিটি চেক বইতে স্বাক্ষরসহ মসজিদের যাবতীয় কাজে তিনি তদারকি করেন এবং তার পরামর্শক্রমে মসজিদের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ব্যাপারে বিভ্রান্তির কোন অবকাশ নেই।
এছাড়া মসজিদের অফিসসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়ে কথা বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বলতে চাই, মসজিদের অবকাঠামোর উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করার জন্যই আমাদের উপর গুরু দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। তাই কোন অপপ্রচার বা সমালোচনায় আমরা আমাদের কর্মকাণ্ড থেকে এক ইন্চিও পিচ পা হব না। মসজিদের স্বার্থে কাজ করা ও মসজিদের স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব।
পরিশেষে বলতে চাই, বদরমোকাম জামে মসজিদ একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠান। একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশবিদেশে এই মসজিদের ব্যাপক সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে। এই মসজিদ কক্সবাজারের সম্পাদ। তাই কারও প্ররোচনায় পড়ে একটি স্বনামখ্যাত দ্বীনি প্রতিষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী মসজিদকে নিউজের খোরাক বানানো খুবই বেদনাদায়ক।
আমরা বদরমোকাম জামে মসজিদ কমিটির সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান সাউদ ও মসজিদের নামে নানা প্রপাগান্ডা ছাড়ানোর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ বিষয়ে কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা সংস্থাকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
মসজিদ কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে শীঘ্রই ঐতিহ্যবাহী বদরমোকাম জামে মসজিদ ও মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মনগড়া মিথ্যা গল্প লিখে মসজিদের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিবাদকারী
বদরমোকাম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি, কক্সবাজার।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-