সৈয়দুল কাদের ◑
কক্সবাজার জেলাব্যাপী সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কক্সবাজার পৌর এলাকার পরিস্থিতি নাজুক অবস্থায় রয়েছে। যথা সময়ে সড়ক সংস্কার ও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কাজল জানিয়েছেন ঈদগাও এর অভ্যন্তরীণ সড়ক দিয়ে চলাচল করলে সুস্থ লোকও অসুস্থ হয়ে পড়বে। খুরুস্কুল দিয়ে ঈদগাও যাওয়ার সড়কটির অবস্থায় খারাপ হয়ে পড়েছে। যথা সময়ে সংস্কার না করায় এসব সড়ক ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলাব্যাপী প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে একাধিক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক পিছিয়ে আছে। কক্সবাজার পৌর এলাকার ১২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসমাঈল জানিয়েছেন, বর্তমানে বিপুল সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করলেও হোটেল-মোটেল জোনের অলি-গলির বিভিন্ন সড়ক দিয়ে হাটাও যায় না। যেদিকে যায় সেদিকেই একই অবস্থা।
কলাতলী প্রধান সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচলও অনেকটা দুরহ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া শহরের টেকপাড়া, হাসপাতাল সড়ক, শহীদ স্মরণী, গোলদিঘীর পাড়, বৌদ্ধ মন্দির সড়ক, বড় বাজার, এন্ডারসন সড়ক, সমিতির পাড়া এলাকা, গাড়ীর মাঠ এলাকার রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এদিকে অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর নাজুক অবস্থা না দেখলে বোঝার উপায় নেই। শহরের প্রধান সড়ক হেঁটে চলাচলই দায়। প্রধান সড়কের বেহাল অবস্থা নিয়ে কেউ অভিযোগ করলেই সড়কটি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বলে দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন। গত এক বছর আগে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জনপ্রশাসন পদক পাওয়ায় আনন্দ সমাবেশে প্রবীণ রাজনীতিবিদ মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন চৌধুরী ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিলেও কোন কাজ হয়নি। কক্সবাজারের ব্যস্ততম প্রধান সড়কটি কার্যত অচল হয়ে আছে। বাজার ঘাটা এলাকার একটি বেসরকারী ব্যাংকের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সড়ক বিভাগের কাজ কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব দেওয়ায় আমরা ভোগান্তিতে আছি। সড়কের এই অবস্থার কারণে কর্মস্থলে আসতে ইচ্ছে হয় না। পুরো শহরবাসীর এত ভোগান্তি হলেও কাজ করার কোন পরিবেশ দেখছি না। কবে হবে প্রধান সড়কটির সংস্কার।
জানা যায়, রোহিঙ্গা শিবিরে ২ হাজারে অধিক বিদেশিসহ অন্তত সাড়ে ১০ হাজার চাকরিজীবী রয়েছে। শহরেই রয়েছে রোহিঙ্গা শিবিরর কেন্দ্রিয় আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন সংস্থার অফিস। এখন মুলত এসব চাকরিজীবীদের কর্মস্থল থেকে বের হওয়াই দুরহ হয়ে পড়েছে।
মহেশখালীর প্রধান সড়ক পুনঃনির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চললেও বৃষ্টির কারণে কাজে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। নির্মাণ কাজ আরো দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিতে স্থানীয় লোকজন অভিমত প্রকাশ করেছেন।
একটি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সড়কের পরিস্থিতির কোন উন্নতি নাই। বরং দিনদিন খারাপ হচ্ছে। একটি পর্যটন নগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থা এমন হতে পারে না।
সওজ কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী পিণ্টু চাকমা বলেন, সাম্প্রতিক টানা ভারী বর্ষণে সড়কের উন্নয়নকাজ ব্যাহত হয়েছে। মহেশখালীর প্রধান সড়কটি দ্রুতগতিতে কাজ শুরু করলেও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কাজ ব্যহত হচ্ছে। ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারীর মধ্যেই মহেশখালীর প্রধান সড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।
কক্সবাজার শহরের সড়কের দুই পাশে নালা খনন, বৈদ্যুতিক খুঁটি, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ভূগর্ভস্থ টিঅ্যান্ডটি ও ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড লাইন অপসারণ ও মাটি ভরাটের কাজ করতে অনেক সময় লেগেছে। বৃষ্টির কারণে যথা সময়ে কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে খুব সময়ের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-