দেশে ঢুকছে উচ্চমূল্যের নতুন মাদক ফেনইথাইলামিন, সজাগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

আদনান সাকিব ◑

ইয়াবার চেয়ে হাজার গুণ দামি ও উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মাদক ঢুকেছে বাংলাদেশে। যার নাম ফেনইথাইলামিন। ইউরোপ-আমেরিকার উচ্চ বর্গীয় মানুষরা এ মাদক সেবন করেন। কিন্তু হঠাৎ এ মাদকসহ র‍্যাবের হাতে আটক হয়েছেন একজন। দেশে প্রথমবারের মতো ধরা পড়েছে নতুন মাদক ফেনইথাইলামিন।

আটকের কাছে ১২ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ৭০০ গ্রাম ফেনইথাইলামিন পাওয়া গেছে। তার থেকেই বেরিয়ে এসেছে নতুন এ মাদকের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্য যেকোনো মাদকের চেয়ে ফেনইথাইলামিন উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন। ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক তৈরিতে ব্যবহার হয় এটি। মাত্র এক সপ্তাহের সামান্যতম ব্যবহারে আসক্ত হয়ে পড়ার পাশাপাশি হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়বে সেবনকারীর।

বাংলাদেশেও চড়া দামের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মাদক ফেনইথাইলামিন পাচারের টার্গেট নিয়েছে। এরইমধ্যে শত কোটি টাকা মূল্যের অন্তত সাত কেজি মাদক বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে তথ্য পেয়েছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। তবে এর বিস্তার রোধ করা না গেলে সমাজে চরম বিশৃঙ্খলার শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

জানা গেছে, কোকেন কেনার নাম করে কয়েকদিন আগে সাড়ে ৭০০ গ্রাম সাদা পাউডারসহ একজনকে আটক করে র‍্যাব। কিন্তু পরবর্তীতে পরীক্ষায় উদ্ধার করা পাউডারগুলো উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মাদক ফেনইথাইলামিন হিসেবে চিহ্নিত হয়। র‌্যাবের দেয়া তথ্য মতে, আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতি কেজি ফেনইথাইলামিনের দাম প্রায় ১৬ কোটি টাকা।

এর আগে ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এ মাদকের কয়েকটি চালান ধরা পড়লেও বাংলাদেশে বিশেষ এ মাদকের চালান আটক এই প্রথম। সম্প্রতি বাংলাদেশের মাদক আইনে এটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, এ মাদক সেবন করার পর আমাদের সেন্ট্রাল নার্ভে কাজ শুরু করে। এটা ইউফোরিয়া সৃষ্টি করে। এছাড়া কোনো দেশে স্বীকৃতভাবে এটি ব্যবহার হয় না।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন ডা. সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, দীর্ঘদিন সেবনের পর ফেনইথাইলামিন বন্ধ করা যায় না। সে কারণে কোটি টাকা হলেও এটি কিনে খেতে হয়। অন্যথায় সেবনকারী পাগল হয়ে যেতে পারে অথবা কাউকে হত্যা করার চেষ্টা করতে পারে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে তিন থেকে সাত কেজি ফেনইথাইলামিন ঢুকেছে বাংলাদেশে। আজিজ নামে এক ব্যক্তির কাছে রয়েছে মাদকের এ মজুত। এ মাদকের রুট জানার জন্য আজিজের সন্ধানে রয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল বলেন, এ মাদক উচ্চ বর্গীয় লোকজন সেবন করেন। অন্য যেসব মাদকসেবী রয়েছেন তারা এটি সেবন করতে পারেন না।

তিনি আরো বলেন, আজিজ দামি এ মাদক বাংলাদেশে ঢোকানোর চেষ্টা করছেন না কি অন্য দেশে নিতে বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে খুলশী থানায় মামলার পর তদন্তভার নিতে যাচ্ছে র‍্যাব।

আরও খবর