ডেইলি বাংলাদেশ ◑
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার বিষয়টি আদালতের নির্দেশে তদন্তাধীন। আদালতের নির্দেশনায় যে তদন্ত চলছে তা শেষ হওয়ার আগেই এটা পত্রিকায় কীভাবে প্রকাশ হলো, সেটা আমার জানা নেই।
তিনি বলেন, যে প্রকাশ করেছে ও তথ্য সরবরাহ করেছে তারা কাজটি সঠিক করেনি। এ বিষয়টি আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। আর ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে আমরা তা দেখবো।
বুধবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
তিনি বলেন, সিনহা হত্যা নিয়ে কোর্টে তদন্ত চলছে। কাজেই এখানে আমরা কোনো রকমের মন্তব্য করবো না, এটা আগেই বলেছি। এটাও বলেছি কোর্ট যদি এই রিপোর্ট চান তাহলে আমরা কোর্টকে দেবো। যাতে নিরপেক্ষ একটি প্রতিবেদন বিচরকদের কাছে যায়। সেজন্য যতো ধরনের প্রচেষ্টা আমরা সেটা নেবো। বর্তমানে কোর্টের নির্দেশে র্যাব তদন্ত করছে। তাদের প্রতিবেদনের আগে কোনো রিপোর্ট বের হয়ে সেই তদন্তকে প্রভাবিত করুক এটা আমরা চাই না। এটা বিচারকরাও চান না।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সস্প্রতি আমাদের কাছে একটি তদন্ত প্রতিবেদন এসেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি এই রিপোর্ট পর্যালাচনা করবে। পরবর্তীতে আমরা কী করবো সেই সিদ্ধান্ত নেবো। এটা পরিষ্কার যেহেতু তদন্তাধীন ও বিচারাধীন মামলা। বিচারক যদি মনে করেন তাদের বিচার কার্যে এটা প্রয়োজন যদি তারা চান তাহলে আমরা এটা তাদের দেবো। না চাইলে আমরা তাদের কাছে দিচ্ছি না।
সিনহা হত্যার তদন্তের প্রতিবেদন কীভাবে প্রকাশ পেল তা কতোখানি সত্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই প্রতিবেদন কিভাবে প্রকাশ পেল সেটা আমার জানা নেই। এটা কতোখানি সত্য বা কতোখানি সত্য নয় এটা আমরা এখন বলতে পারবো না। আমরা যেহেতু পড়েনি, আমরা পড়বো তারপর বলবো এটা সত্য কি না? এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য একটি প্রত্রিকায় প্রকাশ পেলো এতে আপনারা কোনো বিবৃতি দেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা যে প্রকাশ করেছেন বা তথ্য সরবরাহ করেছেন আমি মনে করি কাজটি সঠিক করেননি।
তাদের বিরুদ্ধে কী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এখনো চিন্তা করছি না। একটি স্বনামধন্য পত্রিকা যেহেতু লিখেছে প্রসঙ্গটা প্রকাশ পেয়েছে। আমরা দেখবো এর সত্যতা কতোখানি এবং কার মাধ্যমে তিনি পেয়েছেন। এছাড়া বিচারের আগেই কেন তিনি এটা প্রকাশ করলেন এটা আমাদের জানার বিষয় থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা প্রকাশ করেছে সঠিক করেননি। বিচারের আগে তারা প্রকাশ করেছে। তাদের কাছেতো চাওয়া হয়নি। কোর্টতো কোনো পত্রিকার কাছে চাইবে না। আমাদের কাছে চাইবে আমরা পাঠিয়ে দেব। আর ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য তদন্তের রিপোর্ট আমরা পর্যালোচনা করবো। আমাদের করণীয় তাদের সুপারিশগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান গত সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কমিটির সদস্য লে. কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন-কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহজাহান আলী ও পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক জাকির হোসেন খান।
তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি পুলিশি তদন্তের বিষয়। কমিটি তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। এখন সচিব এটা বিশ্লেষণ করে দেখবেন। পরবর্তী সময়ে আদালত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বুধবার দেশের একটি প্রথম সারির পত্রিকায় ‘সিনহা হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন, পুলিশের কর্মকাণ্ড ছিল হঠকারী, অপেশাদারি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-