ঘুরেফিরে একই স্থানে থাকতে পারবেন না পুলিশ কর্মকর্তারা

ডেস্ক রিপোর্ট ◑ পুলিশ সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে একই জেলা বা থানায় দায়িত্ব পালন করছেন। বদলি করা হলেও তদবির করে সেখানেই থাকার চেষ্টা করছেন কিংবা কয়েক মাস পর ফের পুরোনো কর্মস্থলে ফিরে আসছেন তারা। এভাবে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা বছরের পর বছর বা ঘুরেফিরে একই স্থানে থাকছেন, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত সরাতে হবে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় নির্দিষ্ট সময় পরপর পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি করার এবং পুরোনো কর্মস্থলে ফেরানোর ক্ষেত্রে তার সততা ও দক্ষতা কঠোরভাবে বিবেচনায় নিতে বলা হয়। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশ, সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রোধে যথাযথ কর্মকৌশল নিয়েও কথা হয়।

কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, জননিরাপত্তা সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা।

বৈঠকে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকার, রাষ্ট্র ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার হেড কোয়ার্টারের মাধ্যমে বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটর করতে হবে। এ সময় ডিজিটাল আইনের পাশাপাশি প্রয়োজনে নতুন কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায় কিনা, সে ব্যাপারেও আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

বৈঠকে সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা নিয়ে আলোচনায় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সারাদেশে অহরহ এ ধরনের মামলা হচ্ছে। কিন্তু কোনো মামলা নেওয়ার আগে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে না। রাষ্ট্রের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এতে অনেকেই মনোবল হারিয়ে ফেলছেন। পুলিশের অমনোযোগী হওয়ার সুবাদে রাষ্ট্রে অসাধু চক্র অপরাধ ঘটাতে পারে। বৈঠকে আগামীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে কোর্টে সংক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি মামলা করলে সেটি যাচাই-বাছাই ছাড়া গ্রহণ না করার জন্য সুপারিশ জানানো হয়। তদন্ত করে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার বিষয়টি আমলে নিতে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে জোরালো দাবি তোলা হয়।

সভায় বলা হয়, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, স্কাইপে) রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বিদেশে বসেও অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিকৃত তথ্য প্রচার করছেন। সভায় এসব অপপ্রচার থামানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে আইনমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে বলার অধিকার আছে। কিন্তু তাদের বক্তব্যগুলো রাষ্ট্রবিরোধী। সাইবার অপরাধ দমনে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার হেড কোয়ার্টারের মাধ্যমে এসব মনিটর করা হবে।

আরও খবর