বর্ধিত সভায় অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী

গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কোন সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না উখিয়া আ’লীগ

শফিক আজাদ,উখিয়া ◑

দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থী স্বঘোষিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি মেনে নেবে না উখিয়া উপজেলার আওয়ামীলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

আওয়ামীলীগ যখন বিরোধী দলে থাকে তখন দ্বিধা বিভক্তি থাকে না, দল ক্ষমতায় আসলেই শুরু হয় দ্বিধা বিভক্তি। ৩০ বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থেকে উখিয়ায় নৌকা প্রতীকের ১০ হাজার ভোটার থেকে ৪০ হাজারে উন্নীত করেছি। রাজনৈতিক জীবনের শেষ প্রাণেÍ এসে জেলা কমিটির দলীয় সংবিধান পরিপন্থি স্বঘোষিত এই মনগড়া কমিটি নিয়ে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের আজ হতাশ।

৭ সেপ্টম্বের (সোমবার) দুপুর ১২টায় উখিয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হল রুমে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের জরুরী বর্ধিত সভায় উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী এসব কথা বলেন।

তিনি এসময় বলেন, দলের ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের কারণে ৫৫ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধুকে হারাতে হয়েছে। দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে আসছি। একদিনের জন্যও দলের সাথে বেঈমানি করিনি। কিন্তু আজ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যারা ইউপি নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল তাদের নাম উক্ত ভিত্তিহীন কমিটিতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও রোহিঙ্গা,জঙ্গি,ইয়াবা,মাদক রাজাকার পুত্র ও দুর্নীতি মামলার চার্জশীট ভূক্ত আসামীরা তথাকথিত এ কমিটিতে দেখা যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, দলের দুর্দিনে আন্দোলন সংগ্রামে আতশী কাঁচ দিয়ে খোঁজলেও সুবিধাবাদীদের দেখা যায় না। তখন রাস্তায় থাকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসঙ্গগঠনের কিছু নিবেদিত প্রাণ। যারা বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুকে ভালবেসে মুজিব আদর্শ চর্চা করেন।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল হক আমিন স্বঘোষিত সম্মেলন কমিটিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, বর্তমান কমিটিকে বাদ দিয়ে একটি ইউনিয়ন কিংবা ওয়ার্ড কমিটিও করতে পারবে না এই ভূঁয়া কমিটি।

তিনি আরো বলেন, ইতিপূর্বে উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দদের নিয়ে ১৫ বারের অধিক সময় সোনারপাড়া ও কক্সবাজারের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সেখানেও উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান কমিটি বিলুপ্তির বিষয়ে কোন কার্যকরি সিদ্ধান্ত হয়নি।

কক্সবাজার জেলা মুক্তিযোদ্ধা লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলম চৌধুরী বলেন, জেলা কিমিটির সাধারণ সম্পাদক গতকাল রবিবার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন গত ১ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে গত ২৭ জুলাই জেলা আওয়ামীলীগ উখিয়া উপজেলার আওয়ামীলীগের তথাকথিত সম্মেলেন প্রস্তুতি কমিটি নাকি গঠন করেছে। গঠনতন্ত্রে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, জেলা কমিটির কোন সম্পাদকীয় পদে থাকাকালিন উপজেলা কমিটির কোন পদে আসার সুযোগ নাই। যদি কোন কারণে থাকলে হয় তাহলে জেলা কমিটির পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। সুতরাং এতে বুঝা যায় উক্ত স্বঘোষিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি সম্পূর্ণ অবৈধ। এতে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিদের ফেসবুকের এসব গুজব নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল আলম মাবুবু এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জরুরী বর্ধিত সভায় অন্যান্যদের বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, মোজাফ্ফর আহমদ সওদাগর, হলদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইসলাম, রত্নাপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আসহাব উদ্দিন মেম্বার, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মাহমুদ, জালিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম, পালংখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এম মঞ্জুর, রাজাপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরু।

অঙ্গসহযোগী সংগঠনের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মকবুল হোসেন মিথুন, উপজেলা তাতী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, উপজেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি আনিসুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা শাহদাৎ হোসেন জুয়েল, এড. মোহাম্মদ রাসেল। এছাড়াও ৬৭ সদস্য বিশিষ্ট উখিয়া উপজেলা কমিটির ৩জন সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন। বাকি সদস্যদের মধ্যে ৩৮ জন এবং ৫ ইউনিয়ন কমিটির ১০ জন সভাপতি/সম্পাদকের মধ্যে ৮জন উক্ত বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভার শুরুতে কোরআন তেলোয়াত করেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাফেজ জাকের আহমদ।

আরও খবর