সিনহা হত্যা : তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কমিটি

ডেস্ক রিপোর্ট ◑

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসেছেন এ-সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি।

সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) ও সরকারের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন কমিটির সদস্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন।

তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এখনো তার দফতরে আসেননি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দফতরে আসলে তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করবেন কমিটির প্রধান।

গত ৩১ জুলাই রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনা প্রকাশের পর দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠলে ঘটনার উৎস, কারণ ও ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে সেই বিষয়ে সুপারিশ দিতে ২ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি চার সদস্যের কমিটি গঠন করে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক জাকির হোসেন খান ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাজাহান আলী।

সাত কর্মদিবস অর্থাৎ ১০ আগস্টের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় বেঁধে দেয় মন্ত্রণালয়। এরপর প্রথমবার কমিটির সময় বাড়ানো হয় ২৩ আগস্ট পর্যন্ত। পরে কমিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সময় ফের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

এ সময়ের মধ্যে ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বক্তব্য গ্রহণ করতে না পারায় কমিটির মেয়াদ সর্বশেষ ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ২ সেপ্টেম্বর কমিটি কক্সবাজার জেলা কারাগার ফটকে প্রদীপ কুমার দাশের বক্তব্য গ্রহণ করে।

শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কক্সবাজার হিল ডাউন সার্কিট হাউসে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, ‘কমিটি অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যুজনিত ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ৬৮ জনের সঙ্গে কথা বলার পর তাদের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়েছে। এই সব কথা-বক্তব্য এবং প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করে কমিটির সকল সদস্য সর্বসম্মতভাবে প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত করছে। যা আগামী ৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হবে। সিনহার মৃত্যুর ঘটনাটি কেন ঘটেছে এবং এ ঘটনায় কারা দায়ী তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।’

দায়িত্ব পাওয়ার ৩৫ দিনের মাথায় রিপোর্ট জমা হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেছিলেন, ‘ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য ১৩টি সুপারিশ করেছে কমিটি। আমাদের কমিটির তদন্ত কার্যক্রমের পাশাপাশি এই ঘটনায় আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলা বর্তমানে বিচারাধীন। আইনি প্রক্রিয়ায় ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ হত্যার ঘটনার জন্য কারা দোষী তা আদালতই নির্ধারণ করবেন। দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দেয়ার এখতিয়ারও আদালতের। আমাদের কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন প্রয়োজন মনে করলে বিচার কাজে ব্যবহার করার এখতিয়ার আদালতের আছে।’

আরও খবর