উখিয়ায় করোনা নিষেধাজ্ঞা উঠতেই বিয়ের হিড়িক পড়েছে!

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া ◑
মহামারি করোনায় আটকেছিল বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। সরকারি বিধিনিষেধে টানা বন্ধ থাকার পর আবারও স্বাভাবিক হচ্ছে সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান।

উখিয়ার প্রত্যেকটি গ্রামাঞ্চলে বাড়ছে বিয়ের অনুষ্ঠান ও আকদ। বর ও কনে পক্ষের লোকজনের আসা-যাওয়া ঘরোয়া পরিবেশে চলছে মেহমানদারি।

বিয়ের দিন-ক্ষণ ঠিক করে এখন চলছে আনুষ্ঠানিকতা। প্রতিদিন এপাড়ার ছেলের সাথে ওপাড়ার মেয়ের বিয়ে হচ্ছে। সুন্নতে থতনা, আকিকা ও মৃত্যুবার্ষিকী পালনসহ লোকজনের খাওয়ার পরিধি বাড়ছে। করোনায় অনুষ্ঠানের অসংখ্য বুকিং বাদ করে দেওয়া ডেকোরেটর ব্যবসায় প্রাণ ফিরছে। গত ৮ মার্চ থেকে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর আটকে যায় বিয়েসহ সামাজিক নানা অনুষ্ঠান।

বিয়ে পড়ানো কাজিরা বলছেন, করোনার প্রভাবে একেবারে কমে যায় বিয়ের অনুষ্ঠান। গত চার মাসে উখিয়ায় গড়ে বিয়ে হয়েছে ৫ থেকে ৭ টি। স্বাভাবিকভাবে যেখানে বিয়ে হতো এর কয়েকগুণ বেশি।

করোনায় লকডাউনের ফলে বিয়ের সংখ্যা অনেক কমে যায়। যাদের খুবই একবারে বেশি প্রয়োজন তারা কোনোরকমে কাবিনটা করে রাখেন। তবে এখন আটকে থাকা কিংবা পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, করোনায় কারো বাসায় যাওয়া যেত না। এখন মাস্ক পরে যাওয়া যাচ্ছে। বিয়েশাদি শুরু হয়েছে। করোনায় সামাজিক দূরত্বের ওপর কড়াকড়ি থাকায় সব আয়োজনই সীমাবদ্ধ থাকে ঘরোয়া পরিবেশে পরিবারের মানুষদের নিয়ে।

ডেকোরেটর ব্যবসায়ী জয়নাল বলেন, করোনায় অনেক দিন দোকান বন্ধ ছিল। কর্মচারীরাও কর্মহীন ছিল। অনেকে আবার দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে অন্য পেশায় চলে গেছে। প্রতি ঈদে মানুষের পারিবারিক ভ্রমণ বেড়ে যায়। এবার কেউ বেড়াতে বা ভ্রমণে যেতে পারেননি। করোনায় ডেকোরেটর ব্যবসা ছিল মন্দা। আশা করি এখন অনুষ্ঠান বাড়বে।

বাবুর্চি শাহজালাল বলেন, করোনায় বিয়েসহ এলাকায় অনেক অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। তবে গোপনে টুকটাক হয়েছে। বড় রান্নাবান্নার কাজ বন্ধ থাকায় তারাও অন্য কাজ করেছেন। এখন আবার পুরোদমে কাজে ফিরছেন তিনি। সামনে আসছে শীতকাল। সকল প্রকার সামাজিক অনুষ্ঠান সেই আগের মতো প্রাণ ফিরে পাবে এমনটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।

বালুখালী ক্যাম্প এগারো এর রোহিঙ্গা মাঝি জিয়াউর রহমান বলেন, করোনায় আমাদের ক্যাম্প এলাকায় বিয়েশাদিতে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। রীতিমতো বিয়েশাদি চলছে স্বাভাবিক নিয়মে। এখানে তেরো বছরের মেয়েদেরও বিয়ে হয়। গেল কিছুদিন আগেও তেরো বছরের মেয়ের সাথে পনেরো বছর ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে। রোহিঙ্গা ছেলের সাথে রোহিঙ্গা মেয়ের বিয়েশাদি হয়। পারিবারিকভাবেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হয়ে থাকে ক্যাম্পে। এখানেও খাওয়া-দাওয়া ও মেহমানদারির সু-ব্যবস্থা থাকে।

আরও খবর