নারীদের পায়ে মেহেদি, ইসলাম কি বলে?

সাজের ধারাবাহিকতায় নারীরা হাতে-পায়ে মেহেদি ব্যবহার করেন। হাতে মেহদি ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দবোধ করলেও; অনেকের পায়ে ব্যবহারে জাগে নানা প্রশ্ন।
আমরা নানি-দাদিদের মুখে তো স্পষ্ট ফতোয়া শুনেছি, পায়ে মেহেদি ব্যবহার জায়েজ নেই। বেয়াদবি! কেন? নবীজি (সা.) দাঁড়িতে মেহেদি ব্যবহার করেছেন। যে মেহেদি নবীজির (সা.) দাঁড়িতে লেগেছে তা কখনো মানুষের পায়ে লাগতে পারে না।

যুক্তি যত চমৎকার উত্তর ততই সোজা! নবীজির (সা.) দাঁড়িতে তেল ব্যবহার করেছে! পানিও ব্যবহার করেছেন! তাই বলে পানি ও তেল আমরা পায়ে ব্যবহার করি না? সুতরাং পায়ে মেহেদি ব্যবহারে বাধা কোথায়? বিখ্যাত ফতোয়গ্রন্থ রদ্দুল মুখতারে আছে, নারীদের জন্য হাতে ও পায়ে মেহেদি লাগানো মুস্তাহাব।

আবু দাউদ শরিফের ৪১৬৪ নম্বর হাদিসে আছে, একজন নারী হজরত আয়েশা (রা.) এর কাছে মেহেদি লাগানো বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন। উত্তরে হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, নারীদের মেহেদি ব্যবহারে মানা নেই। তবে রাসূল (সা.) মেহেদির ঘ্রাণ অপছন্দ করতেন।

ফেকাহর বিভিন্নগ্রন্থে নারীদের হাতে পায়ে মেহেদির ব্যবহারকে উৎসাহিতও করেছে। তবে পুরুষ শুধু চিকিৎসার জন্য মেহেদি ব্যবহার করতে পারবে। না হয় হাতে পায়ে কোথাও ব্যবহার করতে পারবে না। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৭৩, আলবাহরুর রায়েক ৮/১৮৩, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/১০৯)।

বিয়ের সময়ও কি পুরুষরা মেহেদি ব্যবহার করতে পারবে না? যাওয়াহিরুল ফিকহ গ্রন্থে আছে, পুরুষরা বিয়ের সময়ও মেহেদি লাগতে পারবে না। সাজ-সজ্জার উদ্যেশ্যে তারা কখনো হাতে-পায়ে মেহেদি লাগাতে পারবে না। কারণ মেহেদি এক ধরনের রঙ। আর পুরুষদের জন্য রঙ ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। হজরত রাসূল (সা.) বলেন, ‘জেনে রাখো, পুরুষরা এমন সুগন্ধ ব্যবহার করবে যাতে সুগন্ধি আছে রং নেই। বিপরীতে নারীরা এমন সুগন্ধী ব্যবহার করবে, যাতে রং আছে সুগন্ধি কম! (তিরমিজি ২৭৮৭, মিশকাত ৪৪৪৩)।

এ ছাড়া মহানবী (সা.) পুরুষদের জন্য রং থাকার কারণে জাফরানের সুগন্ধি ব্যবহার করতেও নিষেধ করেছেন। (বুখারি ৫৮৪৬, মুসলিম ২১০১, মিশকাত ৪৪৩৪)। তবে চিকিৎসার প্রয়োজনে যেকোনো স্থানে মেহেদি ব্যবহার করা জায়েজ আছে। (তিরমিজি ২০৫৪)।

মাথার চুল ও দাঁড়িতে মেহেদি ব্যবহার করা উত্তম। (আবুদাউদ, তিরমিজি, মিশকাত হা/৪৪৫১)।

আরও খবর