বেরিয়ে এলো ‘প্যান্ট খুলে’ হুমকি দেয়ার পেছনের রহস্য

অনলাইন ডেস্ক ◑  সাজ্জাদ হোসেন বাবলু। সম্প্রতি মায়ের সামনে ‘প্যান্ট খুলে’ দাঁড়িয়ে থাকা তার একটি ভিডিও এবং ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। তবে ফেসবুকে ভুক্তভোগী হিসেবে তুলে ধরা হয় এক তরুণীকে। কিন্তু বাবলুকে আটকের পর বেরিয়ে এলো এ ঘটনার পেছনের রহস্য।
বাবলু চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানার পশ্চিম মাদারবাড়ির টং ফকির মাজার লেন এলাকার ছালেহ আহমেদের ছেলে।

বাবলুর বাবা ছালেহ আহমেদ বলেন, ফেসবুকে যে মেয়েকে আমার ছেলে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে, তার সঙ্গে আমাদের কোনো ঝামেলা নেই। সে আমাদের প্রতিবেশী।

বাবলু কাকে উদ্দেশ্য করে খারাপ ভঙ্গি করেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই সময় মূলত পাশের বাড়ির আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে আমাদের ঝগড়া চলছিল। প্রথমে আব্দুর রাজ্জাক আমার ছেলেকে উদ্দেশ্য করে খারাপ ভঙ্গি করে, এরপর সেও রাগ ধরে রাখতে না পেরে একই কাজটি করেছে। তবে ওই মেয়েকে কিছু বলেনি আমার ছেলে বাবলু। মেয়েটি ঝগড়া দেখতে এসেছিলো।

আব্দুর রাজ্জাকের খারাপ ভঙ্গির প্রমাণ আছে কি না- জানতে চাইলে ছালেহ আহমেদ বলেন, আব্দুর রাজ্জাকের বাসায় সিসি ক্যামেরা আছে, তাই আমার ছেলের ভিডিও এসেছে। আমাদের তো সিসি ক্যামেরা নেই।

এদিকে বাবলুর পরিবারের মতো একই দাবি করেছে ওই তরুণীর (যাকে ফেসবুকে ভুক্তভোগী হিসেবে তুলে ধরা হয়) পরিবারও। ভুক্তভোগীর মা বলেন, শ্বশুরবাড়ি থেকে বেড়াতে এসেছিলো আমার মেয়ে। আব্দুর রাজ্জাক ও ছালেহ আহমেদের পরিবারের মধ্যে ঝগড়া চলছিল। আওয়াজ শুনে সে দেখতে যায়। কিন্তু তার সঙ্গে কিছু হয়নি। রাতে জামাই এসে মেয়েকে নিয়ে গেছেন।

খারাপ ভঙ্গির বিষয়টি মিথ্যা দাবি করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি কিংবা আমার পরিবারের কেউ খারাপ ভঙ্গি করেননি। বরং বাবলু করেছে। সেটা সবাই দেখেছে।

বাবলু ওই তরুণীর উদ্দেশ্যে করেছে কি না- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সে তো সবার সঙ্গে বেয়াদবি করে। এলাকায় সবাই তাকে বখাটে হিসেবে চেনে। এ ঘটনায় আমরা মামলা করেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ছালেহ আহমেদ ও আব্দুর রাজ্জাকের পরিবারের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকে। তাদের এ বিরোধ বেশ পুরনো। তারা সবসময় এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে। তাদের জন্য এলাকার পরিবেশটাই নষ্ট হয়ে গেছে।

বাবলু ওই তরুণীকে খারাপ ভঙ্গি করেছিলো কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জানামতে, এখানে ওই তরুণীর সঙ্গে কিছু হয়নি। সে শুধু দেখতে গিয়েছিল।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এসি (কোতোয়ালি) নোবেল চাকমা বলেন, বাবলুর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করেন আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী। ওই মামলায় বুধবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে ১৯ আগস্ট বাবলুর বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ছয়দিন পর মঙ্গলবার ‘বাবলু কর্তৃক ওই তরুণীকে ধর্ষণের হুমকি’ মর্মে একটি ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর বিষয়টি নজরে এলে ওই রাতেই নগরীর আগ্রাবাদ এলাকা থেকে বাবলুকে আটক করে পুলিশ।

আরও খবর