রফিক উদ্দিন বাবুল, উখিয়া ◑
সীমান্তের ওয়ালিদং পাহাড়ের পাদদেশে সৃষ্ট, বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সংযুক্ত খর¯্রােতা রেজুখালের ভয়াবহ ভাঙ্গনে উখিয়ার চরপাড়া আবাসন প্রকল্পে বসবাসকারী পরিবার গুলো প্রকৃতির উচ্ছেদ আতংক নিয়ে দিন কাটাচ্ছে। এখানে বসবাসরত প্রায় ২শতাধিক ভূমিহীন পরিবার গুলোর দাবী রেজুখালের ভাঙ্গন প্রতিরোধে তারা বেশ কয়েকবার প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন নিবেদন করেও কোন কাজ হয়নি। গত ৭/৮ দিনের টানা ও ভারী বর্ষণে ভাঙ্গন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।
এ উপজেলার উপকূলীয় জনপদ জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সোনারপাড়া এলাকায় বঙ্গোপসাগরের মোহনায় এ চরপাড়ার অবস্থান। আবাসন প্রকল্পে বসবাসকারী রহমত উল্লাহ জানায়, দীর্ঘ ৩০ বছর আগে প্রশাসন ভূমিহীন ২শতাধিক পরিবারকে চরপাড়া এলাকায় মেরিন ড্রাইভের পশ্চিম পাশের্^ সবুজ বেষ্টনির ভিতরে পুর্ণবাসন করেন।
তারা সেখানে বসবাসের পাশাপাশি সমুদ্রের করাল গ্রাস থেকে রক্ষার জন্য ঝাউগাছ রোপন ও সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত ছিল। প্রায় ৭/৮ বছর ধরে রেজু খালের ভাঙ্গনে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি তাদের পাড়ায় ধাবিত হচ্ছিল।
গত কয়েক বছর ধরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি তাদের গ্রামে হানা দিতে থাকে। ক্রমান্বয়ে ১/২টি করে ঝাউগাছ ভেঙ্গে ভাঙ্গন ক্রমশ এগিয়ে আসছিল। গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে ভাঙ্গন আবাসন প্রকল্পের আশে পাশে চলে আসায় বসবাসরত ভূমিহীন পরিবারগুলোর মধ্যে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলার উপক্রম হয়েছে। এমতাবস্থায় তিনি ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
চরপাড়ায় বসবাসকারী হুসনে আরা নামের এক গৃহবধু জানায়, তাদের এ বাড়ীটি ছাড়া আশ্রয়ের আর কোন জায়গা নেই। যে ভাবে জোয়ারের পানিতে চরপাড়া ভাঙ্গছে তাতে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তাদের বাড়ীঘর সমুদ্রে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
পশ্চিম সোনারপাড়া ওয়ার্ডের মেম্বার রফিক জানায়, চরপাড়া আবাসন প্রকল্পে বসবাসরত প্রায় ২শতাধিক ভূমিহীন পরিবার খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। তাদের আর কোন আশ্রয়ের জায়গা না থাকায় ভাঙ্গন ঠেকাতে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে অনেক দেনদরবার করেেেছ। বর্তমানে আশ্রয়ন প্রকল্পের ভাঙ্গন ব্যাপক আকারে রূপ নেওয়ায় এসব পরিবারগুলোর আহাজারিতে আকাশ বাতাশ প্রকম্পিত হচ্ছে।
স্থানীয় জালিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত পরিবারদের তিনি একাধিকবার খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করেছেন। ভাঙ্গন প্রতিরোধ তার কোন বরাদ্ধ না থাকায় তিনি কোন কাজ করতে পারেননি। তবে বিষয়টি তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, তিনি চরপাড়া ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং এ ব্যাপারে একটি সন্তোষজনক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পরিপত্র প্রেরণের মাধ্যমে ভাঙ্গন প্রতিরোধে বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-